রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে অগ্রগতি: মিয়ানমার নিশ্চিত করল ১ লাখ ৮০ হাজারের তালিকা

রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে অগ্রগতি: মিয়ানমার নিশ্চিত করল ১ লাখ ৮০ হাজারের তালিকা
ব্যাংকক, ৪ এপ্রিল:
বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গাদের মধ্যে ১ লাখ ৮০ হাজার শরণার্থীকে মিয়ানমারে প্রত্যাবাসনের জন্য উপযুক্ত হিসেবে চিহ্নিত করেছে দেশটির জান্তা সরকার। এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন মায়ানমারের উপ-প্রধানমন্ত্রী ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী উ থান শিউ, শুক্রবার ব্যাংককে অনুষ্ঠিত ষষ্ঠ বিমসটেক সম্মেলনের ফাঁকে এক দ্বিপক্ষীয় বৈঠকে।
বৈঠকে তিনি বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টার উচ্চপ্রতিনিধি ড. খলিলুর রহমানের কাছে জানান, আরো ৭০ হাজার রোহিঙ্গার যাচাইকরণ কাজ চূড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছে। এই যাচাইয়ের জন্য তাদের ছবি ও নাম যাচাই-বাছাই চলছে।
২০১৮-২০২০ সালের মধ্যে ছয় দফায় তালিকা দিয়েছিল বাংলাদেশ
বাংলাদেশ ২০১৮ থেকে ২০২০ সালের মধ্যে ছয় দফায় রোহিঙ্গাদের মূল তালিকা মিয়ানমারকে সরবরাহ করে। সেই তালিকা অনুযায়ী, মোট ৮ লাখ রোহিঙ্গার তথ্য মিয়ানমার সরকারের হাতে রয়েছে। এবার প্রথমবারের মতো এত বড় একটি অংশের ব্যাপারে সরাসরি প্রত্যাবাসনের উপযুক্ততা নিশ্চিত করল মিয়ানমার।
দীর্ঘদিন পর প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়ায় অগ্রগতি
রোহিঙ্গা সংকট শুরুর প্রায় সাত বছর পর এই প্রথম কোনো নিশ্চিত তালিকা প্রকাশ করল মিয়ানমার, যা প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়ায় বড় অগ্রগতি হিসেবে দেখা হচ্ছে।
মায়ানমার আরো জানিয়েছে, বাকি ৫ লাখ ৫০ হাজার রোহিঙ্গার যাচাইকরণ প্রক্রিয়াও দ্রুত শেষ করা হবে।
বাংলাদেশে মানবিক সহায়তা পাঠাতে প্রস্তুত
বৈঠকে ড. খলিলুর রহমান মায়ানমারে সাম্প্রতিক ভূমিকম্পে ক্ষতিগ্রস্তদের প্রতি সমবেদনা জানান এবং বলেন,
“দুর্যোগে ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের পাশে দাঁড়াতে বাংলাদেশ প্রস্তুত। প্রয়োজনে আমরা অতিরিক্ত মানবিক সহায়তা পাঠাব।”
প্রাসঙ্গিক পটভূমি:
২০১৭ সালে মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে সেনাবাহিনীর নির্যাতন ও সহিংসতা থেকে পালিয়ে সাড়ে সাত লাখের বেশি রোহিঙ্গা বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়। বর্তমানে কক্সবাজারের শরণার্থী ক্যাম্পে প্রায় ১০ লাখের বেশি রোহিঙ্গা অবস্থান করছে।
এই সংকটের স্থায়ী সমাধানের জন্য আন্তর্জাতিক মহলের দীর্ঘদিনের আহ্বান সত্ত্বেও প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়া বারবার ব্যর্থ হয়েছে।