বিদেশি বিনিয়োগে নতুন দিগন্তের আশ্বাস দিল বিএনপি — ‘প্রত্যেক বিনিয়োগকারীর জন্য থাকবে ইনভেস্টমেন্ট ক্যাপ্টেন’

বিদেশি বিনিয়োগে নতুন দিগন্তের আশ্বাস দিল বিএনপি — ‘প্রত্যেক বিনিয়োগকারীর জন্য থাকবে ইনভেস্টমেন্ট ক্যাপ্টেন’
আগামীতে যদি বিএনপি ক্ষমতায় আসে, তবে বাংলাদেশের অর্থনীতিকে পুনর্গঠনে বিদেশি বিনিয়োগকারীদের জন্য অভূতপূর্ব সুবিধা প্রদানের ঘোষণা দিয়েছেন দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী।
বৃহস্পতিবার (১০ এপ্রিল) সন্ধ্যায় রাজধানীর বনানীর হোটেল সারিনাতে বাংলাদেশে বিনিয়োগ সম্মেলনের প্রাক্কালে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এ ঘোষণা দেন।
তিনি বলেন, “আমরা একটি ডিরেগুলেটেড, মুক্ত ও প্রতিযোগিতামূলক অর্থনীতি গড়ে তুলতে চাই। প্রতিটি বিনিয়োগকারীর জন্য বিডাতে থাকবে একজন করে ‘ইনভেস্টমেন্ট ক্যাপ্টেন’। তিনি বিনিয়োগকারীর যাবতীয় প্রক্রিয়া সম্পন্ন করবেন নির্ধারিত সময়ে। বিনিয়োগকারীকে আর কোনো মন্ত্রণালয়ে ঘুরতে হবে না।”
আগাম পরিকল্পনা: ভিশন ২০৩০ ও ৩১ দফা সংস্কার
আমির খসরু জানান, বিএনপির অর্থনৈতিক দর্শন ও সংস্কার কর্মসূচি আগেই নির্ধারিত। ভিশন ২০৩০ এবং ৩১ দফার সংস্কারে সেই পরিকল্পনার প্রতিফলন রয়েছে। এতে করে দেশে বিনিয়োগবান্ধব পরিবেশ সৃষ্টি হবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
তিনি বলেন, “১৯৮০ সালে জিয়াউর রহমান বেসরকারি খাতকে সুরক্ষা দিতে আইন করেছিলেন। আমরা সেই ধারাবাহিকতাতেই চলছি। বিনিয়োগকারীরা যেন কোনো ধরনের জটিলতায় না পড়েন, সেই লক্ষ্যেই নতুন উদ্যোগ নিচ্ছি।”
বৈশ্বিক বিনিয়োগকারীদের জন্য বাংলাদেশ প্রস্তুত
বিশ্বজুড়ে বিনিয়োগকারীরা এখন তাদের পলিসি পুনর্বিন্যাস করছে জানিয়ে তিনি বলেন, “বাংলাদেশও সেই সুযোগ নিতে প্রস্তুত। ইপিজেড বাস্তবায়নের সময় যেমন আমরা দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছি, এবারও সেই রকম এক নতুন দিগন্তের সূচনা হবে।”
ঐক্যবদ্ধ জাতীয় প্রচেষ্টার আহ্বান
বর্তমান সরকারের বিনিয়োগ সম্মেলনের উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়ে আমির খসরু বলেন, “জাতীয় স্বার্থে আমাদের সবাইকে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে। বিদেশি বিনিয়োগ দীর্ঘমেয়াদি বিষয়। তাই নীতিমালা ও ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা বিনিয়োগকারীদের জানানো জরুরি। সেই কাজটিই আমরা করছি।”
অর্থনৈতিক উন্নয়ন মানে উৎপাদন ও রপ্তানি
বিএনপি নেতা বলেন, “আমরা সবসময় বিশ্বাস করি—উন্নয়ন মানে উৎপাদন এবং রপ্তানি। সেজন্য বেসরকারি খাতই হবে অর্থনীতির চালিকাশক্তি। বিনিয়োগই একমাত্র উপায় আমাদের অর্থনীতিকে সামনে এগিয়ে নেওয়ার।”
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি দাবি করেন, “আমরা যখন ক্ষমতা ছাড়ি, প্রবৃদ্ধি ছিল ৭.০৭%। সেই ধারায় যদি চলত, আজ আমরা ডাবল ডিজিটে থাকতাম। কিন্তু গত ১৭-১৮ বছরে দুর্নীতি আর ভুল ব্যবস্থাপনার কারণে সে গতি থেমে গেছে।”
এসময় অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন বিএনপির শীর্ষ পর্যায়ের একাধিক উপদেষ্টা ও আন্তর্জাতিক বিনিয়োগ বিষয়ক নেতৃবৃন্দ।