বিএনপি ও প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের বৈঠক: নির্বাচনী প্রস্তুতি না রাজপথে আন্দোলন?

বিএনপি ও প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের বৈঠক: নির্বাচনী প্রস্তুতি না রাজপথে আন্দোলন?
আজ বুধবার (১৬ এপ্রিল ২০২৫) দুপুর ১২টায় রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) একটি গুরুত্বপূর্ণ বৈঠকে বসবে। এই বৈঠককে ঘিরে দেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে ব্যাপক কৌতূহল ও আলোচনা সৃষ্টি হয়েছে।
বৈঠকের গুরুত্ব ও সম্ভাব্য প্রভাব
বিএনপি নেতারা মনে করছেন, এই বৈঠকের ফলাফলের ওপর নির্ভর করবে দলের ভবিষ্যৎ কর্মপন্থা। বৈঠক ফলপ্রসূ হলে বিএনপি আগামী সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে প্রস্তুতি শুরু করবে। অন্যথায়, তারা রাজপথে আন্দোলনের কর্মসূচি গ্রহণ করতে পারে।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু বলেন, “নির্বাচন নিয়ে সরকারের বক্তব্য স্পষ্ট নয়। বরং বিভিন্ন সময়ে বিএনপিকে নিয়ে বিভিন্ন ধরনের মন্তব্য করা হচ্ছে, যা সরকারের ক্ষমতা ধরে রাখার ইচ্ছার প্রতিফলন।”
সরকারের অবস্থান ও বিএনপির উদ্বেগ
বিএনপি মনে করছে, সরকারের পক্ষ থেকে নির্বাচন নিয়ে যে সময়সীমা (চলতি বছরের ডিসেম্বর থেকে আগামী জুন) উল্লেখ করা হচ্ছে, তা স্পষ্ট নয়। এতে জনমনে ধোঁয়াশা সৃষ্টি হয়েছে এবং বিএনপি এক ধরনের ‘ষড়যন্ত্র’ দেখতে পাচ্ছে।
বৈঠকের আলোচ্যসূচি ও কৌশল
গতকাল রাতে বিএনপির স্থায়ী কমিটির বৈঠকে আজকের বৈঠকের আলোচ্যসূচি নির্ধারণ করা হয়েছে। নেতারা নির্বাচনের সুনির্দিষ্ট সিদ্ধান্ত আদায়ের জন্য কৌশল নির্ধারণ করেছেন। বিএনপি নেতারা মনে করেন, ড. ইউনূসের সম্মানের বিষয়টি মাথায় রেখে তারা কাজ করছেন এবং তাকে বিব্রত করেন না এমন কিছু করতে চান না।
তিন মাসের কর্মপরিকল্পনা
বিএনপি ইতোমধ্যে আগামী তিন মাসের জন্য একটি কর্মপরিকল্পনা তৈরি করেছে, যার মধ্যে রয়েছে সভা-সমাবেশ, পদযাত্রা, মিছিল ইত্যাদি। এই কর্মসূচিগুলো তৃণমূল থেকে শুরু করে ঢাকায় বড় ধরনের শোডাউনের মাধ্যমে পালন করার পরিকল্পনা রয়েছে। এই পরিকল্পনা দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের কাছে লিখিতভাবে জমা দেওয়া হয়েছে।
বিএনপির একজন গুরুত্বপূর্ণ নেতা বলেন, “নির্বাচনের দাবিতে ঈদের আগে কর্মসূচি পালিত হয়েছে। দ্বিতীয় ধাপেও শান্তিপূর্ণভাবে কর্মসূচি পালন করার পরিকল্পনা করা হচ্ছে। এসব কর্মসূচিতে ব্যাপক জনসমাগমের মধ্য দিয়ে বিএনপি এই বার্তা দিতে চাইবে যে দীর্ঘদিন ধরে দেশের ভোটবঞ্চিত জনগণ এখন গণতন্ত্রে উত্তরণের অপেক্ষায় আছে।”
আজকের বৈঠকের ফলাফল দেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব ফেলতে পারে। বৈঠক সফল হলে নির্বাচনমুখী প্রস্তুতি, আর ব্যর্থ হলে রাজপথে আন্দোলনের সম্ভাবনা রয়েছে।