সারাদেশ

তারেক রহমানের আহ্বান: দ্রুত জাতীয় সংসদ নির্বাচন দিন

তারেক রহমানের আহ্বান: দ্রুত জাতীয় সংসদ নির্বাচন দিন

বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি)-এর ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান আবারও দ্রুত জাতীয় সংসদ নির্বাচন দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি। তিনি বলেছেন, “অন্তর্বর্তী সরকারের প্রথম কাজ হলো একটি স্বচ্ছ নির্বাচন উপহার দেওয়া। আমরা প্রত্যাশা করি, যত দ্রুত সম্ভব তারা সেটা করবে।”

গতকাল শনিবার দুপুরে যশোর জেলা বিএনপির সম্মেলনে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

দল পুনর্গঠনের ওপর গুরুত্ব

তারেক রহমান বলেন, “বিএনপির প্রধান কাজ এখন দল পুনর্গঠন করা, শক্তিশালী করা এবং ঘোষিত ৩১ দফা সংস্কার প্রস্তাব জনগণের কাছে পৌঁছে দেওয়া।”

তিনি দাবি করেন, বিএনপিই একমাত্র দল, যারা নিজেদের নেতাকর্মীদের অন্যায়ের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়। তিনি বলেন, “জনগণ সমর্থন করে না—এমন কাজ বিএনপি করে না। তা সত্ত্বেও কিছু নেতাকর্মী ভুল করতে পারে, তাদের বিরুদ্ধে আমরা ব্যবস্থা নিয়েছি।”

স্বৈরাচারের বিরুদ্ধে লড়াই চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা

তারেক রহমান অভিযোগ করেন যে, বর্তমান সরকার দেশের সব প্রতিষ্ঠান ধ্বংস করে দিয়েছে এবং বলেন, “৬০ লাখ বিএনপি নেতাকর্মীর নামে মিথ্যা মামলা রয়েছে। এই সম্মেলনে আগত প্রায় সব কাউন্সিলরের নামেও বহু মিথ্যা মামলা রয়েছে।”

তিনি আরও বলেন, “স্বৈরাচারী শাসক দীর্ঘ সময় ধরে রাষ্ট্রক্ষমতা দখল করে রেখেছে, কিন্তু বিএনপি ও গণতান্ত্রিক শক্তি রাজপথে লড়াই চালিয়ে গেছে। অসংখ্য নেতাকর্মী শহীদ হয়েছেন।”

ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা

তারেক রহমান বলেন, “যদি বিএনপি আবার ক্ষমতায় আসে, তাহলে দেশ পুনর্গঠন, রাষ্ট্রকাঠামো মেরামত, উৎপাদন বাড়ানো, শিক্ষাব্যবস্থা শক্তিশালী করা, নারীদের ক্ষমতায়ন ও স্বাস্থ্যব্যবস্থার উন্নয়নে মনোযোগ দেওয়া হবে, যাতে চিকিৎসার জন্য মানুষকে বিদেশে যেতে না হয়।”

সম্মেলনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠান

সম্মেলনের উদ্বোধনী অধিবেশন শুরু হয় সকাল সাড়ে ১০টায় পতাকা উত্তোলন, পায়রা ও বেলুন উড়িয়ে। অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আমানউল্লাহ আমান।

তিনি বলেন, “আমরা আশা করছি, দেশে শিগগির জাতীয় নির্বাচন হবে। এই নির্বাচনে জনগণের সমর্থন নিয়ে বেগম খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানের নেতৃত্বে সরকার গঠিত হবে।”

নতুন নেতৃত্বের প্রত্যাশা

সম্মেলনে সভাপতিত্ব করেন জেলা বিএনপির বিদায়ী আহ্বায়ক অধ্যাপক নার্গিস বেগম। তিনি সভাপতি পদে নির্বাচন করার কথা থাকলেও শেষ মুহূর্তে প্রতিদ্বন্দ্বিতা থেকে সরে দাঁড়ান। বিদায়ি বক্তব্যে তিনি বলেন, “নতুন নেতৃত্ব আসবে, তাদের নেতৃত্বে দল আরও শক্তিশালী হবে। বিএনপির দুর্দিনে ছিলাম, আছি, ভবিষ্যতেও থাকব।”

অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন:

  • বিএনপির কেন্দ্রীয় ভারপ্রাপ্ত সাংগঠনিক সম্পাদক (খুলনা বিভাগ) অনিন্দ্য ইসলাম অমিত
  • সহসাংগঠনিক সম্পাদক (খুলনা বিভাগ) জয়ন্ত কুমার কুণ্ডু
  • সহধর্মবিষয়ক সম্পাদক অমলেন্দু দাস অপু
  • সাবেক দপ্তর সম্পাদক মফিকুল হাসান তৃপ্তি
  • জেলা বিএনপির বিদায়ী যুগ্ম আহ্বায়ক ও নবনির্বাচিত সাধারণ সম্পাদক দেলোয়ার হোসেন খোকন (অনুষ্ঠানের সঞ্চালক)

রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতামত

রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন, বিএনপি এখন পুনর্গঠনের মাধ্যমে নিজেদের রাজনৈতিক শক্তি বাড়াতে চাইছে। জাতীয় নির্বাচনের দাবি জানিয়ে দলটি সরকারকে চাপে রাখার কৌশল নিচ্ছে বলে তারা মনে করছেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button