ইশরাক হোসেনকে মেয়র ঘোষণা: রাজনৈতিক অঙ্গনে নতুন আলোচনার ঝড়

ইশরাক হোসেনকে মেয়র ঘোষণা: রাজনৈতিক অঙ্গনে নতুন আলোচনার ঝড়
ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র হিসেবে বিএনপি নেতা ইশরাক হোসেনকে ঘোষণা করেছেন আদালত। বৃহস্পতিবার (২১ মার্চ) এই রায় আসার পর থেকে রাজনৈতিক মহল ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিষয়টি নিয়ে নানা আলোচনা চলছে।
অনেকেই প্রশ্ন তুলেছেন, বর্তমান সরকার পরিচালিত নির্বাচনকে ‘ভুয়া’ বলে সমালোচনা করা বিএনপি নেতা ইশরাক হোসেন কি মেয়র হিসেবে শপথ নেবেন? তবে ইশরাক স্পষ্ট করেছেন, এটি সম্পূর্ণ দলের সিদ্ধান্তের ওপর নির্ভর করছে।
আইনি লড়াইয়ের দীর্ঘ পথচলা
আজ (২২ মার্চ) বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক অনুষ্ঠানে ইশরাক হোসেন জানান, তিনি নির্বাচনে পরাজিত হননি, বরং তাকে পরিকল্পিতভাবে হারিয়ে দেওয়া হয়েছিল।
২০২০ সালের ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন নির্বাচনের পরই তিনি আইনি লড়াইয়ে যান। পাঁচ বছর পর আদালত থেকে ন্যায়বিচার পেলেন বলে দাবি করেন তিনি।
তিনি আরও বলেন, “ন্যায়বিচার পাওয়ার জন্যই আমি আদালতে গিয়েছিলাম এবং দীর্ঘদিন পর সেটি পেয়েছি। এ রায়ের মাধ্যমে আইনের শাসনের একটি দৃষ্টান্ত স্থাপিত হয়েছে।”
রাজনৈতিক বিতর্ক ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের প্রতিক্রিয়া
ইশরাক হোসেন অভিযোগ করেন, তার এই আইনি প্রক্রিয়া নিয়ে একটি মহল সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিতর্ক সৃষ্টি করছে। তিনি বলেন,
“অনেকে মনে করছেন যে, ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর আমি মামলা করেছি। কিন্তু এটি সঠিক নয়। আইন অনুযায়ী স্থানীয় সরকার নির্বাচনের ফলাফলের বিরুদ্ধে ৩০ দিনের মধ্যে অভিযোগ দাখিল করতে হয়, এবং আমি সেই সময়সীমার মধ্যেই মামলা করেছিলাম।”
তিনি আরও দাবি করেন যে, মামলাটি ১৮০ দিনের মধ্যে নিষ্পত্তির বিধান থাকলেও, ‘ফ্যাসিবাদী সরকার’ এটিকে দীর্ঘদিন বাধাগ্রস্ত করেছিল।
শপথ নেবেন কি না?
বৃহস্পতিবার রায়ের পর থেকেই সবচেয়ে আলোচিত প্রশ্ন হলো—ইশরাক হোসেন কি মেয়র হিসেবে শপথ গ্রহণ করবেন?
এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “এটি দলের সর্বোচ্চ ফোরামের সিদ্ধান্তের ওপর নির্ভর করছে। দলীয় সিদ্ধান্ত অনুযায়ী আমি আমার পরবর্তী পদক্ষেপ নেব।”
রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট
ইশরাক হোসেন বিএনপির একজন তরুণ নেতা, যিনি ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিলেন। বিএনপি বরাবরই দাবি করে আসছে, শেখ হাসিনার শাসনামলে অনুষ্ঠিত নির্বাচনগুলো ‘প্রহসনমূলক’ এবং তারা এই নির্বাচনের ফলাফল মানে না।
কিন্তু আদালতের রায়ে মেয়র পদে বসার সুযোগ পাওয়ার পর ইশরাক হোসেনের শপথ গ্রহণের সিদ্ধান্ত দলকে রাজনৈতিকভাবে দ্বিধায় ফেলে দিয়েছে।
পরবর্তী করণীয়
এখন দেখার বিষয়, বিএনপি কী সিদ্ধান্ত নেয়? ইশরাক যদি শপথ নেন, তাহলে এটি দলের অবস্থানের সঙ্গে সাংঘর্ষিক হতে পারে।
শপথ না নিলে, তার রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ কী হবে?
এ বিষয়ে বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত ভূমিকা রাখবে।