জঙ্গিসংশ্লিষ্টতার প্রমাণ না পাওয়ায় জামায়াত আমির শফিকুর ও তাঁর ছেলে অব্যাহতি পাচ্ছেন

জঙ্গিসংশ্লিষ্টতার প্রমাণ না পাওয়ায় জামায়াত আমির শফিকুর ও তাঁর ছেলে অব্যাহতি পাচ্ছেন
জঙ্গিসংশ্লিষ্টতার প্রমাণ না পাওয়ায় জামায়াত আমির শফিকুর ও তাঁর ছেলে অব্যাহতি পাচ্ছেন
জঙ্গিসংশ্লিষ্টতার অভিযোগে গ্রেপ্তার হওয়া জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান ও তাঁর ছেলে ডা. রাফাত সাদিক সাইফুল্লাহকে মামলার দায় থেকে অব্যাহতি দিতে যাচ্ছে তদন্ত সংস্থা কাউন্টার টেররিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম ইউনিট (সিটিটিসি)। দুই বছর চার মাস তদন্তের পর তাঁদের বিরুদ্ধে কোনো জঙ্গিসংশ্লিষ্টতার প্রমাণ মেলেনি বলে জানা গেছে।
মামলার পটভূমি
২০২২ সালের ১৩ ডিসেম্বর সিটিটিসি ডা. শফিকুর রহমানকে গ্রেপ্তার করে। এর আগে একই অভিযোগে তাঁর ছেলে ডা. রাফাতকে গ্রেপ্তার করা হয়। তাঁদের কয়েক দফায় রিমান্ডে নেওয়া হয় এবং জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়।
অভিযোগপত্র দাখিল ও অব্যাহতির সুপারিশ
গত ৬ মার্চ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ও সিটিটিসির পুলিশ পরিদর্শক মো. আবুল বাসার আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। এতে চারজনকে অভিযুক্ত করা হয়েছে এবং সাতজনকে অব্যাহতির সুপারিশ করা হয়েছে। আগামী ১৩ মে আদালতে এই অভিযোগপত্র উপস্থাপন করা হবে।
যাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ রয়েছে
অভিযুক্ত চার আসামি হলেন:
- মামুনুর রশিদ
- সেজাদুল ইসলাম সাহাব তানিম
- মো. জাহিদ হাসান ভূঁইয়া
- সৈয়দ রিয়াজ আহমদ
তবে মামুনুর রশিদ পলাতক থাকায় তাঁর বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির আবেদন করা হয়েছে।
যাদের অব্যাহতির সুপারিশ করা হয়েছে
- জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান
- তাঁর ছেলে ডা. রাফাত সাদিক সাইফুল্লাহ
- আরিফ ফাহিম সিদ্দিকী
- তায়েফ
- মিজু
- আঞ্জুম
- হোসাইন
তদন্তের ফলাফল
তদন্তে দেখা গেছে, সিলেট জেলার সবুজবাগ এলাকার জামে মসজিদে নিয়মিত নামাজ পড়তেন অভিযুক্তরা। আসামি সেজাদুল ইসলাম সাহাব তানিম ও তাঁর বন্ধু তাহিয়াত ২০২১ সালের ১৮ জুন নাইক্ষ্যংছড়ি এলাকায় রোহিঙ্গাদের সহায়তার নামে একটি জঙ্গি সংগঠনের সঙ্গে সংযোগ স্থাপনের চেষ্টা করেন। তবে ডা. রাফাত ও অন্যরা বিষয়টি বুঝতে পেরে ডা. শফিকুর রহমানের সাহায্যে সেখান থেকে নিরাপদে ফিরে আসেন।
পরবর্তী সময়ে আসামি তানিম নিষিদ্ধ জঙ্গি সংগঠন আনসার আল ইসলামের সিলেট অঞ্চলের দায়িত্বশীল মামুনুর রশিদ কাজলের সঙ্গে যোগাযোগ করেন এবং নতুন সদস্য সংগ্রহের চেষ্টা করেন। ২০২২ সালের ১ নভেম্বর যাত্রাবাড়ী থেকে তানিম, জাহিদ ও রিয়াজ গ্রেপ্তার হন। পরবর্তী তদন্তে দেখা যায়, ডা. শফিকুর রহমান ও তাঁর ছেলে এই কার্যক্রমের সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিলেন না।
আইনজীবীর প্রতিক্রিয়া
ডা. শফিকুর রহমানের আইনজীবী আব্দুর রাজ্জাক বলেছেন, “রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত হয়ে এই মামলায় জামায়াত আমির এবং তাঁর ছেলেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।”
আগামী ১৩ মে আদালতে মামলার শুনানি হবে, যেখানে তাঁদের অব্যাহতির বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত আসতে পারে।