সারাদেশ

জেলা প্রশাসক সম্মেলনের পর মাঠ প্রশাসনে নতুন উদ্দীপনা

জেলা প্রশাসক সম্মেলনের পর মাঠ প্রশাসনে নতুন উদ্দীপনা

ঢাকা, ১৮ ফেব্রুয়ারি: সদ্য সমাপ্ত জেলা প্রশাসক (ডিসি) সম্মেলনের পর দেশের মাঠ প্রশাসনে ব্যাপক উদ্দীপনা দেখা যাচ্ছে। গত ১৬ ফেব্রুয়ারি থেকে তিন দিনব্যাপী অনুষ্ঠিত এই সম্মেলনের পর জেলা প্রশাসকরা নিজ নিজ কর্মস্থলে ফিরে গিয়ে নতুন উদ্যমে কাজ শুরু করেছেন।

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, এবার জেলা প্রশাসক সম্মেলনের পর প্রশাসনের কর্মকাণ্ডে দ্রুত পরিবর্তন আসছে। অনেক জেলা প্রশাসকই আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নয়নে সমন্বয় সভা করছেন এবং বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে তাৎক্ষণিক সিদ্ধান্ত নিচ্ছেন। মাঠপর্যায়ের স্থবিরতা দূর করতে তাঁরা উদ্যোগী হয়েছেন।

ড. ইউনূসের নির্দেশনা: টনিকের মতো কাজ করছে

জেলা প্রশাসকরা জানিয়েছেন, এবারের সম্মেলনের সবচেয়ে বড় অনুপ্রেরণা ছিলেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। তাঁর নীতিনির্ধারণী বক্তব্য প্রশাসনের কর্মকর্তাদের জন্য দিকনির্দেশনা হিসেবে কাজ করছে।

ড. ইউনূস প্রশাসনকে একটি দল হিসেবে চিহ্নিত করে বলেন, “একটি টিমের সবাই যদি সঠিকভাবে কাজ না করে, তবে ভালো ফল পাওয়া সম্ভব নয়। প্রশাসনকেও সমন্বিতভাবে কাজ করতে হবে।” তিনি কর্মকর্তাদের প্রজাতন্ত্রের কর্মচারী হিসেবে দায়িত্ব পালনের আহ্বান জানান এবং দলীয় স্বার্থের ঊর্ধ্বে থেকে জনসেবায় মনোযোগী হতে বলেন।

চার দফা নির্দেশনা দিলেন প্রধান উপদেষ্টা

ড. মুহাম্মদ ইউনূস জেলা প্রশাসকদের উদ্দেশে চারটি দিকনির্দেশনা দেন, যা আগামী দিনের প্রশাসনিক ব্যবস্থার রূপরেখা হতে পারে।

১. নির্মোহ ও নিরপেক্ষ প্রশাসন: সরকার বা রাজনৈতিক দলের স্বার্থে নয়, আইনের ভিত্তিতে সিদ্ধান্ত গ্রহণের আহ্বান জানান তিনি।
2. জনবান্ধব প্রশাসন: প্রশাসনের সঙ্গে জনগণের দূরত্ব কমাতে এবং হয়রানি বন্ধ করতে বিশেষ উদ্যোগ নেওয়ার পরামর্শ দেন।
3. সৃজনশীল ও উদ্ভাবনী দক্ষতা প্রয়োগ: নতুন আইডিয়া ও প্রযুক্তির মাধ্যমে জনসেবাকে আরও কার্যকর করার নির্দেশ দেন তিনি।
4. স্বাধীনভাবে সিদ্ধান্ত গ্রহণ: মাঠ প্রশাসনকে সব সিদ্ধান্তের জন্য কেন্দ্রের দিকে না তাকিয়ে স্থানীয়ভাবে সমস্যা সমাধানের ক্ষমতা দেওয়ার কথা বলেন।

প্রশাসনে বড় পরিবর্তনের আভাস

ড. ইউনূসের বক্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে প্রশাসনের কর্মকর্তারা মনে করছেন, এই দর্শন বাস্তবায়ন হলে দেশে কার্যকর, নিরপেক্ষ ও জনবান্ধব প্রশাসন গড়ে উঠবে। জেলা প্রশাসকদের কর্মতৎপরতা ও ইতিবাচক পরিবর্তন দেখে অনেকেই মনে করছেন, এবার সত্যিই মাঠ প্রশাসনে নতুন দিগন্তের সূচনা হতে পারে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button