সিরিয়ার গণকবর: আসাদ শাসনামলে নিহত ১ লাখ মানুষের দেহাবশেষের সন্ধান
যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক সিরীয় পর্যবেক্ষক সংস্থা দাবি করেছে, সিরিয়ার ক্ষমতাচ্যুত প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদের শাসনামলে নিহত অন্তত এক লাখ মানুষের দেহাবশেষ দামেস্কের উত্তরে আল-কুতাইফাহ অঞ্চলের একটি গণকবরে রয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক সিরীয় পর্যবেক্ষক সংস্থা দাবি করেছে, সিরিয়ার ক্ষমতাচ্যুত প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদের শাসনামলে নিহত অন্তত এক লাখ মানুষের দেহাবশেষ দামেস্কের উত্তরে আল-কুতাইফাহ অঞ্চলের একটি গণকবরে রয়েছে।
পর্যবেক্ষক সংস্থার প্রধান মৌয়াজ মোস্তফা জানিয়েছেন, সিরিয়ার রাজধানী থেকে ৪০ কিমি উত্তরে অবস্থিত এই স্থানটি পাঁচটি গণকবরের একটি। তিনি কয়েক বছরের অনুসন্ধানের পর এই কবরগুলো শনাক্ত করেছেন।
মোস্তফা জানান, ‘‘খুব রক্ষণশীল হিসাবেও সেখানে প্রায় এক লাখ মানুষের দেহাবশেষ রয়েছে।’’ তার মতে, এসব গণকবরে সিরিয়ার নাগরিকদের পাশাপাশি বিদেশিদের মরদেহও থাকতে পারে।
২০১১ সালে বাশার আল-আসাদের শাসনের বিরুদ্ধে সিরিয়ায় শুরু হওয়া গণবিক্ষোভ গৃহযুদ্ধে রূপ নেয়। আসাদ এবং তার বাবা হাফেজ আল-আসাদের ৫৩ বছরের শাসনকাল ধরে সিরিয়া ব্যাপক মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগে অভিযুক্ত।
আল-আসাদ শাসনামলে কুখ্যাত কারাগার ব্যবস্থার মাধ্যমে ব্যাপক বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড চালানোর অভিযোগ ওঠে। তবে আসাদ বরাবরই এই অভিযোগ অস্বীকার করে সমালোচকদের চরমপন্থী হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন।
মোস্তফা আরও জানান, আসাদের বিভিন্ন গোয়েন্দা বাহিনীর নির্যাতনের শিকার হয়ে নিহতদের মরদেহ সামরিক হাসপাতালগুলোতে নিয়ে যাওয়া হতো। পরে সিরিয়ার বিমান বাহিনীর তত্ত্বাবধানে এসব মরদেহ গণকবরে সরিয়ে নেওয়া হয়।
তিনি উল্লেখ করেন, সরাসরি এই প্রক্রিয়ায় জড়িত থাকা কয়েকজন ব্যক্তি তার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন। পরবর্তী সময়ে তারা সিরিয়া ছেড়ে পালিয়ে যান।মোস্তফা চ্যানেল ৪ নিউজ এবং রয়টার্সের সঙ্গে আলাপকালে জানান, সিরিয়ায় গণকবরগুলো অরক্ষিত অবস্থায় পড়ে থাকায় গুরুত্বপূর্ণ প্রমাণ নষ্ট হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।
সিরিয়ায় ২০১১ সালে শুরু হওয়া গৃহযুদ্ধে লাখ লাখ মানুষ প্রাণ হারায় এবং মিলিয়নেরও বেশি মানুষ গৃহহীন হয়ে পড়ে। বাশার আল-আসাদের বিরুদ্ধে মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগে আন্তর্জাতিক মহলে বারবার সমালোচনা হয়েছে।
উৎস: আলজাজিরা, রয়টার্স