আন্তজার্তিক অঙ্গন

উত্তর সিরিয়ায় সংঘর্ষে দুই দিনে নিহত ১০০ এর বেশি যোদ্ধা

উত্তর সিরিয়ায় সংঘর্ষে দুই দিনে নিহত ১০০ এর বেশি যোদ্ধা

উত্তর সিরিয়ায় তুরস্ক সমর্থিত গোষ্ঠী এবং কুর্দি নেতৃত্বাধীন সিরিয়ান ডেমোক্রেটিক ফোর্সেসের (এসডিএফ) মধ্যে তীব্র সংঘর্ষে গত দুই দিনে ১০০ জনের বেশি যোদ্ধা নিহত হয়েছে। রবিবার সিরিয়ান অবজারভেটরি ফর হিউম্যান রাইটস এই তথ্য জানিয়েছে।

মানবিজে রক্তক্ষয়ী লড়াই

স্থানীয় সময় শুক্রবার সন্ধ্যা থেকে আলেপ্পো প্রদেশের মানবিজ শহরের আশপাশের কয়েকটি গ্রামে এই সংঘর্ষ শুরু হয়। এতে নিহতদের মধ্যে ৮৫ জন তুরস্ক সমর্থিত গোষ্ঠীর সদস্য এবং ১৬ জন এসডিএফ যোদ্ধা বলে জানিয়েছে সিরিয়ান অবজারভেটরি।

এসডিএফ এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, তারা তুরস্কের ড্রোন ও বিমান সহায়তাপ্রাপ্ত ভাড়াটে বাহিনীর আক্রমণ প্রতিহত করেছে। সংঘর্ষের ফলে মানবিজ ও তাল রিফাতসহ বেশ কয়েকটি এলাকায় উত্তেজনা চরমে পৌঁছেছে।

সিরিয়ান অবজারভেটরির প্রধান রামি আবদেল রহমান জানিয়েছেন, তুরস্ক সমর্থিত বাহিনীর প্রধান লক্ষ্য হলো কোবানি এবং তাবকা শহর দখল করা, যা থেকে তারা রাক্কার দিকে অগ্রসর হওয়ার পরিকল্পনা করছে।

কুর্দি নেতৃত্বাধীন এসডিএফের ভূমিকা

এসডিএফ বর্তমানে সিরিয়ার উত্তর-পূর্বাঞ্চল এবং দেইর ইজোর প্রদেশের কিছু অংশ নিয়ন্ত্রণ করছে। সিরিয়ার গৃহযুদ্ধ শুরু হওয়ার পর এই অঞ্চলগুলোতে কুর্দিরা একটি স্বায়ত্তশাসন প্রতিষ্ঠা করে। যুক্তরাষ্ট্র সমর্থিত এসডিএফ এসব এলাকাকে ইসলামিক স্টেট (আইএস)-এর জঙ্গিদের থেকে মুক্ত করেছে।

তুরস্ক এসডিএফকে কুর্দিস্তান ওয়ার্কার্স পার্টির (পিকেকে) একটি শাখা হিসেবে বিবেচনা করে। পিকেকে দীর্ঘদিন ধরে তুরস্কে বিদ্রোহ পরিচালনা করছে, যাকে তুর্কি সরকার সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে চিহ্নিত করেছে। তুর্কি সামরিক বাহিনী নিয়মিত কুর্দি যোদ্ধাদের বিরুদ্ধে সিরিয়া এবং প্রতিবেশী ইরাকে অভিযান চালিয়ে আসছে।

হায়াত তাহরির আল-শামের অবস্থান

সিরিয়ার নতুন নেতা ও ইসলামপন্থী গোষ্ঠী হায়াত তাহরির আল-শামের (এইচটিএস) প্রধান আহমেদ আল-শারা বলেছেন, এসডিএফ ভবিষ্যতে সিরিয়ার সেনাবাহিনীতে অন্তর্ভুক্ত হতে পারে। এইচটিএস গত মাসে আসাদবিরোধী বিদ্রোহী গোষ্ঠীগুলোর নেতৃত্ব দিয়ে প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদকে ক্ষমতাচ্যুত করে।

উত্তর সিরিয়ার পরিস্থিতি ক্রমেই জটিল হয়ে উঠছে। তুরস্ক সমর্থিত বাহিনী ও এসডিএফের মধ্যে লড়াই অব্যাহত রয়েছে। এতে সাধারণ মানুষের জীবন আরো দুর্বিষহ হয়ে উঠছে।

উত্তর সিরিয়ার এই সংঘর্ষ আন্তর্জাতিক মহলের নজর কেড়েছে। এই অঞ্চলে শান্তি স্থাপনের জন্য বিশ্বনেতারা কূটনৈতিক সমাধানের আহ্বান জানিয়েছেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button