যাত্রাবাড়ী আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিস দালালমুক্ত: সেবার মানে ইতিবাচক পরিবর্তন
যাত্রাবাড়ী আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিস দালালমুক্ত: সেবার মানে ইতিবাচক পরিবর্তন
দক্ষিণ কেরানীগঞ্জের ঝিলমিল আবাসিক এলাকায় অবস্থিত যাত্রাবাড়ী আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিসে সেবার মানে উল্লেখযোগ্য উন্নয়ন ঘটেছে। সরেজমিনে ঘুরে দেখা গেছে, অফিস এখন প্রায় দালালমুক্ত এবং সেবা নিতে আসা সাধারণ জনগণ হয়রানির শিকার হচ্ছেন না।
২০১৭ সালে ঘিঞ্জি পরিবেশ থেকে নতুন ভবনে স্থানান্তরের পর অফিসের কার্যক্রমে শৃঙ্খলা ফিরে এসেছে। আগে যেখানে দালালদের দৌরাত্ম্য ছিল ভয়াবহ, সেখানে এখন অফিস কর্তৃপক্ষ দালালমুক্ত পরিবেশ নিশ্চিত করেছে।
নতুন পরিবেশে সেবা
পাসপোর্ট অফিসটি ছয়তলা ভবনে অবস্থিত। পঞ্চমতলায় প্রশাসনিক কাজ এবং তৃতীয়তলায় পাসপোর্ট আবেদনের সারিবদ্ধ প্রক্রিয়া পরিচালিত হচ্ছে। আবেদন জমা থেকে ফিঙ্গারপ্রিন্ট ও ছবি তোলা পর্যন্ত সব কাজ একটি নির্দিষ্ট প্রক্রিয়ার মাধ্যমে হচ্ছে।
অফিসে আগতদের মধ্যে কেউ অনলাইনে আবেদন জমা দেওয়ার পর ফিঙ্গারপ্রিন্ট এবং ছবি তোলার জন্য এসেছেন, আবার কেউ তাদের আবেদনপত্রের অবস্থা জানতে ভিড় করছেন। দক্ষিণ কেরানীগঞ্জের হাসনাবাদ থেকে আসা তাপস দাস জানান, তিনি অনলাইনে আবেদন জমা দেওয়ার পর ম্যাসেজ পেয়ে ফিঙ্গারপ্রিন্ট দিতে এসেছেন। অন্যদিকে, খিলগাঁও থেকে আসা হাজি মো. মিরাজ আহমেদ বলেন, “পাসপোর্ট অফিস এখন দালালমুক্ত। এটি আগের মতো নয়, সেবার মান অনেক উন্নত হয়েছে।”
পরিচালকের মন্তব্য
আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিস যাত্রাবাড়ীর পরিচালক মেহের উদ্দিন দালালদের বিষয়ে বলেন, “বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের পর দালালদের দৌরাত্ম্য অনেকটাই বন্ধ হয়েছে। আমরা পাসপোর্ট অফিসের পরিবেশ সুষ্ঠু রাখতে সর্বোচ্চ চেষ্টা করছি।”
তিনি আরও জানান, অফিসের ১০০ গজ দূরে কিছু কম্পিউটার দোকানে দালালরা সক্রিয় থাকতে পারে, তবে অফিসের ভেতরে কোনো দালালের কার্যক্রম নেই বলে দাবি করেন।
সাধারণ জনগণের মতামত
পাসপোর্ট প্রত্যাশীদের মধ্যে কেউ কেউ বলেছেন, আগে দালালদের মাধ্যমে কাজ করাতে গিয়ে ভোগান্তি পোহাতে হতো। এখন দালালের প্রভাব কমে যাওয়ায় নিজেরাই সহজেই পাসপোর্ট করতে পারছেন। যাত্রাবাড়ী অফিসে বর্তমানে সেবা পেতে ঘুষ বা দালালের প্রয়োজন হয় না, যা ইতিবাচক পরিবর্তন বলে অনেকে মত প্রকাশ করেছেন।
যাত্রাবাড়ী আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিসে সেবার মানের উন্নয়ন দেশের অন্যান্য অফিসের জন্য উদাহরণ হতে পারে। সাধারণ জনগণের স্বতঃস্ফূর্ত সেবা নিশ্চিত করতে এবং দালালমুক্ত পরিবেশ বজায় রাখতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের উদ্যোগ প্রশংসনীয়।