কুয়েটে ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধ, রাজনীতির সঙ্গে জড়িতদের আজীবন বহিষ্কার

কুয়েটে ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধ, রাজনীতির সঙ্গে জড়িতদের আজীবন বহিষ্কার
খুলনা, বুধবার: খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (কুয়েট) ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধের আগের সিদ্ধান্ত বহাল রাখা হয়েছে। বুধবার এক জরুরি সিন্ডিকেট সভায় এ বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। সভায় জানানো হয়, শিক্ষার্থীরা রাজনীতির সঙ্গে জড়িত হলে তদন্ত সাপেক্ষে আজীবন বহিষ্কার ও ছাত্রত্ব বাতিল করা হবে।
বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন জানায়, গত ১১ আগস্ট অনুষ্ঠিত ৯৩তম সিন্ডিকেট সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, কুয়েটে সব ধরনের রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড নিষিদ্ধ করা হয়েছিল। নতুন সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, শিক্ষার্থীদের পাশাপাশি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীরাও কোনো রাজনৈতিক সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত হতে পারবেন না। এ নিয়ম লঙ্ঘন করলে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিধান অনুযায়ী চাকরিচ্যুতিসহ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
হামলার ঘটনায় মামলা ও তদন্ত কমিটি গঠন
গত মঙ্গলবারের হামলার ঘটনায় কুয়েট প্রশাসনের পক্ষ থেকে খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশের খানজাহান আলী থানায় ৪০০ থেকে ৫০০ অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তির বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে। এ ঘটনায় চার সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটিকে আগামী তিন কর্মদিবসের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে।
তদন্ত কমিটির সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পেয়েছেন কুয়েটের কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অধ্যাপক ড. এম এম এ হাসেম। কমিটির অন্য সদস্যরা হলেন অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ আবু ইউসুফ, অধ্যাপক ড. আবু জাকির মোর্শেদ এবং ছাত্রকল্যাণ পরিষদের সহকারী পরিচালক শাহ মুহাম্মদ আজমত উল্লাহ।
একাডেমিক কার্যক্রম বন্ধ, তবে হলত্যাগের সিদ্ধান্ত হয়নি
সিন্ডিকেট সভায় সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে, কুয়েটের একাডেমিক কার্যক্রম আগামী ২৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত বন্ধ থাকবে। তবে শিক্ষার্থীদের হলত্যাগের বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি।
উপাচার্য ২৪ ঘণ্টা অবরুদ্ধ থাকার পর মুক্ত
মঙ্গলবার বিকেলে কুয়েটের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ মাছুদ শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের সময় আহত হয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিক্যাল সেন্টারে চিকিৎসার জন্য গেলে সেখানেই তাঁকে অবরুদ্ধ করে রাখা হয়। প্রায় ২৪ ঘণ্টা পর গতকাল বিকেল ৫টা ১০ মিনিটে তিনি মুক্ত হন।
রাজনৈতিক প্রতিক্রিয়া ও মানববন্ধন
এ ঘটনায় বিএনপি, যুবদল ও ছাত্রদল ছাত্রশিবিরকে দায়ী করেছে। অন্যদিকে ছাত্রশিবির দাবি করেছে, ছাত্রদল বহিরাগত সন্ত্রাসীদের নিয়ে শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা চালিয়েছে। বিএনপি এক বিবৃতিতে এ ঘটনায় উদ্বেগ ও নিন্দা জানিয়েছে।
এদিকে, ঢাকার জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে বৈষম্যবিরোধী প্রকৌশলী পরিষদের উদ্যোগে একটি মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে। তারা হামলাকারীদের ৭২ ঘণ্টার মধ্যে গ্রেপ্তার এবং বহিষ্কারের দাবি জানিয়েছে।