দক্ষিণ কোরিয়ায় উচ্চশিক্ষা: গুণগত শিক্ষার পাশাপাশি কাজের সুযোগও আকর্ষণীয়
দক্ষিণ কোরিয়ায় উচ্চশিক্ষা: গুণগত শিক্ষার পাশাপাশি কাজের সুযোগও আকর্ষণীয়
দক্ষিণ কোরিয়া আন্তর্জাতিক মানের উচ্চশিক্ষার জন্য এক জনপ্রিয় গন্তব্যস্থল। দেশটির শীর্ষস্থানীয় বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে বিদেশি ছাত্রছাত্রীদের জন্য রয়েছে আকর্ষণীয় স্কলারশিপ, বিশ্বমানের শিক্ষা, এবং কাজের সুযোগ। এছাড়া ইংরেজি ভাষায় পাঠ্যক্রমের কারণে ভাষাগত বাঁধা অপেক্ষাকৃত কম হলেও, খণ্ডকালীন চাকরির জন্য কোরিয়ান ভাষায় দক্ষতা অর্জন প্রয়োজনীয়।
দক্ষিণ কোরিয়ায় কেন পড়বেন?
দক্ষিণ কোরিয়া এশিয়ার অন্যতম অর্থনৈতিকভাবে সমৃদ্ধ দেশ এবং বিশ্বের ওয়ার্ল্ড র্যাঙ্কিংয়ের শীর্ষ শতকের মধ্যে দেশটির ৫টি বিশ্ববিদ্যালয় স্থান পেয়েছে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো সিউল ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি, কোরিয়া অ্যাডভান্সড ইনস্টিটিউট অব সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজি, ইয়োনসেই ইউনিভার্সিটি এবং কোরিয়া ইউনিভার্সিটি। দক্ষিণ কোরিয়ার অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা এবং কর্মসংস্থানের প্রাচুর্যের কারণে বিদেশি ছাত্রছাত্রীদের ভবিষ্যৎ ক্যারিয়ার গড়তে সুবিধাজনক।
স্কলারশিপ ও খণ্ডকালীন চাকরির সুযোগ
দক্ষিণ কোরিয়ার বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় স্কলারশিপের সুবিধা দেয় যা বিদেশি ছাত্রছাত্রীদের আকর্ষণ বাড়িয়ে তুলেছে। যেমন ইয়োনসেই ইউনিভার্সিটি ও কোরিয়া ইউনিভার্সিটি আংশিক বা পূর্ণ স্কলারশিপ প্রদান করে। এছাড়া, স্যামসাং গ্লোবাল হোপ স্কলারশিপ প্রোগ্রাম প্রতি সেমিস্টারে ৩৯ লাখ কোরিয়ান ওন প্রদান করে। পাশাপাশি, আন্ডারগ্র্যাজুয়েট ছাত্রছাত্রীরা সপ্তাহে ২০ ঘণ্টা এবং গ্র্যাজুয়েট ছাত্রছাত্রীরা ৩০ ঘণ্টা খণ্ডকালীন কাজের সুযোগ পান।
দক্ষিণ কোরিয়ার বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর জন্য আবেদন পদ্ধতি ও প্রয়োজনীয় নথি
সাধারণত, সেমিস্টার শুরুর অন্তত তিন থেকে চার মাস আগে আবেদন জমা দিতে হয়। স্নাতক ও স্নাতকোত্তর পর্যায়ের জন্য প্রয়োজনীয় নথি হলো—পাসপোর্ট, শিক্ষাগত যোগ্যতার সনদ, ভাষাগত দক্ষতার সনদ, আর্থিক সহায়তার প্রমাণ এবং অন্যান্য কাগজপত্র। ভিসার প্রক্রিয়ায় আবেদনকারীদেরকে দক্ষিণ কোরিয়ান দূতাবাসে গিয়ে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র জমা দিতে হয়।
কেন পড়তে যাবেন দক্ষিণ কোরিয়ায়?
- উচ্চমানের শিক্ষা: একাডেমিক কৃতিত্বের জন্য দক্ষিণ কোরিয়া সম্মানজনক। কিউএস ওয়ার্ল্ড র্যাঙ্কিংয়ের শীর্ষ ১০০-তে সিউল ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি, কোরিয়া ইউনিভার্সিটি, এবং আরও কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয় রয়েছে।
- স্কলারশিপ সুবিধা: কোরিয়ার ইউনিভার্সিটি এবং বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠান আংশিক ও পূর্ণ স্কলারশিপ প্রদান করে থাকে। যেমন, স্যামসাং গ্লোবাল হোপ স্কলারশিপ প্রোগ্রাম।
- অর্থনৈতিক সুযোগ: স্থিতিশীল অর্থনীতির কারণে শিক্ষার্থীরা খণ্ডকালীন কাজের মাধ্যমে পড়াশোনার পাশাপাশি জীবনধারণ করতে পারেন।
সেরা বিশ্ববিদ্যালয়
দক্ষিণ কোরিয়ায় যে কয়েকটি স্বনামধন্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান রয়েছে—
- সিউল ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি
- কোরিয়া অ্যাডভান্সড ইনস্টিটিউট অব সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজি
- ইয়োনসেই বিশ্ববিদ্যালয়
- কোরিয়া ইউনিভার্সিটি
- পোহং ইউনিভার্সিটি অব সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজি
জনপ্রিয় পাঠ্যবিষয়
- বিজনেস ম্যানেজমেন্ট, ইঞ্জিনিয়ারিং, ফ্যাশন ডিজাইন, আন্তর্জাতিক সম্পর্ক, বায়োটেকনোলজি, সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজি।
ভর্তির জন্য প্রয়োজনীয় নথি
- পাসপোর্ট, আবেদনপত্র, শিক্ষাগত সনদ ও ট্রান্সক্রিপ্ট, ভাষার দক্ষতা সনদ (TOEFL/IELTS), ব্যক্তিগত বিবৃতি, ব্যাংক স্টেটমেন্ট, এবং লেটার অব রিকমেন্ডেশন।
ভিসা প্রক্রিয়া
ডি-২ ভিসার জন্য আবেদন করে দীর্ঘমেয়াদি অধ্যয়ন সম্ভব। ভিসার আবেদন করতে প্রয়োজন—
- স্টুডেন্ট ভিসার আবেদনপত্র
- ভর্তির অফার লেটার
- আর্থিক সহায়তার প্রমাণপত্র
- স্বাস্থ্য পরীক্ষা সনদ
খণ্ডকালীন চাকরি
একটি সেমিস্টার সম্পন্ন করার পর শিক্ষার্থীরা খণ্ডকালীন কাজ করতে পারেন, যেমন—
- ক্যাশিয়ার: ঘণ্টাপ্রতি ৯ থেকে ১০ হাজার ওন
- সেলস অ্যাসোসিয়েট: ১১ থেকে ১২ হাজার ওন
- গবেষণা সহকারী: ১২ থেকে ১৩ হাজার ওন
দক্ষিণ কোরিয়ায় পড়াশোনা এবং কাজের অভিজ্ঞতা শিক্ষার্থীদের জন্য নতুন দিগন্তের সূচনা করতে পারে।