মস্কোয় জেনারেল হত্যা: যুদ্ধের বাস্তবতা যেন সামনে এসে দাঁড়াল
জেনারেল কিরিলোভ তার বাসা থেকে বের হওয়ার সময় একটি বৈদ্যুতিক স্কুটারে লুকানো বোমার বিস্ফোরণে নিহত হন। তার সহকারী ইলিয়া পোলিকারপভও এই ঘটনায় আহত হন।
রাশিয়ার মস্কো শহরে মঙ্গলবারের ঘটনা যুদ্ধের বাস্তবতাকে যেন সেখানকার মানুষের একদম চোখের সামনে নিয়ে এসেছে। তিন বছর ধরে চলমান ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধ এতদিন মস্কোর বাসিন্দাদের কাছে অনেকটা দূরের একটি বিষয় মনে হলেও লেফটেন্যান্ট জেনারেল ইগর কিরিলোভ হত্যার ঘটনা সেই ভাবনার মোড় ঘুরিয়ে দিয়েছে।
নাটকীয় হত্যাকাণ্ড:
জেনারেল কিরিলোভ তার বাসা থেকে বের হওয়ার সময় একটি বৈদ্যুতিক স্কুটারে লুকানো বোমার বিস্ফোরণে নিহত হন। তার সহকারী ইলিয়া পোলিকারপভও এই ঘটনায় আহত হন। মস্কোর মতো সুরক্ষিত শহরের কেন্দ্রে এমন একটি ঘটনায় সাধারণ মানুষের মনে ভীতি ছড়িয়েছে।
মস্কোর বাসিন্দা লিজা বলেন, ‘গণমাধ্যমে এমন খবর পড়া আর চোখের সামনে ঘটনা দেখা একদম আলাদা বিষয়। যুদ্ধের বাস্তবতা আমাদের কাছে অনেক দূরের মনে হলেও এই ঘটনার পর আমরা বুঝতে পারছি এটি আমাদের খুব কাছেই।’
যুদ্ধের প্রভাব এখন মস্কোর জীবনযাত্রায় সরাসরি ছাপ ফেলছে। প্রতিটি শব্দকেই সন্দেহজনক মনে হচ্ছে, আর ড্রোনের শব্দ বা বিস্ফোরণের আতঙ্ক বাসিন্দাদের ওপর ভর করছে।
এই ঘটনায় রাশিয়ার রাজনৈতিক মহল থেকে তীব্র প্রতিক্রিয়া এসেছে।
- সাবেক প্রেসিডেন্ট দিমিত্রি মেদভেদেভ খুনিদের খুঁজে বের করে তাদের পৃষ্ঠপোষকদের ধ্বংস করার আহ্বান জানিয়েছেন।
- রুশ রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে উপস্থাপক ইউক্রেনকে দায়ী করে বলেছেন, এ ঘটনার মাধ্যমে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি তার “মৃত্যুদণ্ডে স্বাক্ষর করেছেন।”
রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন এ ঘটনায় সরাসরি কোনো প্রতিক্রিয়া না জানালেও অতীতে তিনি বলেছেন, রাশিয়া হামলা বা নিরাপত্তা হুমকির জবাবে কঠোর পদক্ষেপ নেবে। বিশ্লেষকরা মনে করছেন, মস্কো এ ঘটনায় প্রতিশোধমূলক পদক্ষেপ নিতে পারে।
ইউক্রেনের ওপর হামলা বন্ধের কোনো ইঙ্গিত এখন পর্যন্ত ক্রেমলিন থেকে পাওয়া যায়নি। বরং এই ঘটনার পর যুদ্ধ আরও তীব্র হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।
মঙ্গলবারের ঘটনা মস্কোর সাধারণ মানুষের জীবনে যে অনিশ্চয়তার ছাপ ফেলেছে, তা রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের প্রভাবকে আরও স্পষ্টভাবে সামনে এনেছে। যুদ্ধ যে এখন আর কেবল “দূরের বিষয়” নয়, সেটি মস্কোর মানুষ হাড়ে হাড়ে টের পাচ্ছে।