অসহযোগিতার কারণে ভারতকে যুক্তরাষ্ট্রের অসহযোগী দেশের তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে
যুক্তরাষ্ট্র সম্প্রতি ভারতকে “অসহযোগী” দেশ হিসেবে ঘোষণা করেছে। যুক্তরাষ্ট্রের অভিবাসন ও শুল্ক প্রয়োগ সংস্থা (আইসিই) অভিযোগ করেছে, প্রত্যর্পণ প্রক্রিয়ায় ভারতের সহযোগিতা যথাযথ ছিল না। তারা সাক্ষাৎকার গ্রহণ, সময়মতো ভ্রমণ নথি ইস্যু করা এবং নির্ধারিত ফ্লাইটে ভারতের নাগরিকদের ফেরত নেওয়ার ক্ষেত্রে ব্যর্থ হয়েছে।
এই অসহযোগিতার কারণে ভারতকে যুক্তরাষ্ট্রের অসহযোগী দেশের তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। এর আগে এই তালিকায় ছিল ভুটান, কিউবা, ইরান, পাকিস্তান, রাশিয়া ও ভেনিজুয়েলা। ভারত এই তালিকার সর্বশেষ সংযোজন।
আইসিই আরও জানিয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রে বর্তমানে ১৪ লাখ ৫০ হাজার অবৈধ অভিবাসীকে বিতাড়িত করার পরিকল্পনা রয়েছে। এর মধ্যে ১৮ হাজার অভিবাসী ভারতের নাগরিক। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে প্রায় ৯০ হাজার ভারতীয়কে যুক্তরাষ্ট্রে অবৈধভাবে প্রবেশের চেষ্টাকালে আটক করা হয়েছে। এই অভিবাসীদের বেশির ভাগই পাঞ্জাব, গুজরাট এবং অন্ধ্র প্রদেশ থেকে আসা।
মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের প্রতিবেদন
মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তর ২০২৩ সালে বিশ্বজুড়ে সন্ত্রাসী কার্যক্রম নিয়ে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০২৩ সালে বাংলাদেশে আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসী হামলার কোনো ঘটনা ঘটেনি। তবে সরকার রাজনৈতিক বিরোধীদের কার্যক্রম প্রায়ই “সন্ত্রাসবাদ” হিসেবে প্রচার করেছে।
প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, বাংলাদেশের নিরাপত্তা বাহিনীর কিছু সদস্যের বিরুদ্ধে বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড এবং মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ রয়েছে। তবে আনসারুল্লাহ বাংলা টিম এবং নব্য জেএমবির মতো জঙ্গি সংগঠনের বিরুদ্ধে সরকার কঠোর অবস্থান নিয়েছে।
২০২৩ সালে পার্বত্য চট্টগ্রামে কুকি-চিন ন্যাশনাল ফ্রন্টের (কেএনএফ) হামলায় তিনজন সেনা নিহত হওয়ার ঘটনাও প্রতিবেদনে উঠে এসেছে।
অন্যদিকে, বাংলাদেশে অনলাইনে উগ্রবাদ ছড়ানোর বিষয়টিকে উদ্বেগজনক হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। ডিসেম্বরে হিযবুত তাহরীরের দুই সদস্যকে গ্রেপ্তার করার ঘটনাও প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে অনলাইন সম্মেলনের অভিযোগ আনা হয়েছিল।
ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন সংশোধন করে সাইবার নিরাপত্তা আইন প্রণয়ন করার বিষয়টিও প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়। মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তর বলেছে, এই নতুন আইনের মাধ্যমে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড ঠেকাতে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী কিছুটা অগ্রগতি অর্জন করেছে।
যুক্তরাষ্ট্রের ভারতকে অসহযোগী হিসেবে তালিকাভুক্ত করা এবং বাংলাদেশ নিয়ে মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের প্রতিবেদন উভয়ই উল্লেখযোগ্য। এটি ভারত এবং বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ নীতিনির্ধারণী ও আন্তর্জাতিক সম্পর্কের ক্ষেত্রে নতুন কিছু চ্যালেঞ্জ আনতে পারে।