ব্যবসা বাণিজ্য

বাজারে বোতলজাত সয়াবিন তেলের সংকটে ভোগান্তি চরমে

বাজারে বোতলজাত সয়াবিন তেলের সংকটে ভোগান্তি চরমে

রাজধানীর বাজারে বোতলজাত সয়াবিন তেলের অভাবের কারণে ভোক্তারা তীব্র সমস্যায় পড়েছেন। খুচরা বিক্রেতারা জানাচ্ছেন, মাত্র দুই-তিনটি কোম্পানির তেল পাওয়া যাচ্ছে, যা চাহিদার তুলনায় একেবারেই অপ্রতুল। বিশেষত এক ও দুই লিটারের বোতল তেলের সরবরাহ প্রায় নেই বললেই চলে।

রামপুরা, বাড্ডা, মহাখালী এবং জোয়ারসাহারা বাজার ঘুরে জানা গেছে, প্রায় এক মাস ধরে বোতলজাত সয়াবিন তেলের সরবরাহ সংকট চলছে। বাড্ডার মুদি বিক্রেতা মো. আব্দুল লতিফ বলেন, আগে যেখানে নিয়মিত পাঁচ-ছয়টি কোম্পানি তেল সরবরাহ করত, এখন সেই সংখ্যা কমে দুই-তিনটিতে দাঁড়িয়েছে। এতে বাজারের চাহিদার ১০ শতাংশও পূরণ হচ্ছে না। একই সমস্যা নিয়ে কারওয়ান বাজারের বিক্রেতা বেলাল উদ্দিন জানান, ডিলারদের কাছ থেকে চাহিদামতো তেল না পাওয়ায় ব্যবসায় ক্ষতি হচ্ছে।

বাজারে খোলা সয়াবিন ও পাম তেলের সরবরাহ স্বাভাবিক থাকলেও অনেক ক্রেতা বোতলজাত তেল না পেয়ে ভেজালের ভয়ে খোলা তেল কিনতে চান না। ক্রেতা পারভীন আক্তার বলেন, বাজারের বেশ কয়েকটি দোকানে খুঁজেও এক লিটারের বোতলজাত তেল পাইনি। বাধ্য হয়ে খোলা তেল কিনতে হয়েছে।

সরবরাহ ঘাটতির পেছনে ভোজ্য তেল সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠানগুলো এলসি (লেটার অব ক্রেডিট) জটিলতার কথা বলছে। তাদের অভিযোগ, একাধিকবার এলসি বাতিল হওয়ায় তেল আমদানিতে বাধা সৃষ্টি হচ্ছে।

বাজার পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে সরকার ভোজ্য তেলের ওপর আমদানি পর্যায়ে ভ্যাট ১০ শতাংশ থেকে কমিয়ে ৫ শতাংশ করেছে। তবে ক্যাবের নির্বাহী পরিচালক খলিলুর রহমান সজল মনে করেন, ভ্যাট কমানোর সুফল বাজারে দেখা যাচ্ছে না। কোম্পানিগুলো ইচ্ছাকৃতভাবে সরবরাহ কমিয়ে কৃত্রিম সংকট তৈরি করছে। রমজানের আগে কঠোর ব্যবস্থা না নিলে পরিস্থিতি আরও জটিল হবে বলে তিনি আশঙ্কা প্রকাশ করেন।

বর্তমানে এক লিটার খোলা সয়াবিন তেল ১৬৫-১৬৮ টাকায় এবং এক লিটার বোতলজাত তেল ১৬৭-১৭০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। পাম তেলের দাম ১৫৭-১৫৯ টাকার মধ্যে রয়েছে।

সরবরাহ সংকট দূর করতে এবং বাজার স্থিতিশীল রাখতে দ্রুত কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া জরুরি। রমজানের আগে এই সংকট নিরসনে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের বিশেষ উদ্যোগ সময়ের দাবি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button