গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধে শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে মামলা: আইসিসির চিফ প্রসিকিউটরের সঙ্গে বৈঠকে ড. মুহাম্মদ ইউনূস
গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধে শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে মামলা: আইসিসির চিফ প্রসিকিউটরের সঙ্গে বৈঠকে ড. মুহাম্মদ ইউনূস
গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধের জন্য বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে (আইসিসি) মামলা দায়েরের ঘোষণা দিয়েছেন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। বুধবার (২৭ নভেম্বর) ঢাকায় রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটর করিম এ খানের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎকালে তিনি এই ঘোষণা দেন।
বৈঠকে রোহিঙ্গা সংকট, মিয়ানমারের মানবাধিকার পরিস্থিতি, রোহিঙ্গাদের জন্য মানবিক সহায়তা এবং জুলাই-আগস্টের গণ-আন্দোলনের সময় ঘটে যাওয়া নৃশংসতার বিচার ও জবাবদিহিতা নিয়ে আলোচনা হয়। করিম এ খান জানান, মিয়ানমারের সামরিক প্রধান মিন অং হ্লাইংয়ের বিরুদ্ধে রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর ওপর মানবতাবিরোধী অপরাধের জন্য আইসিসি গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করার প্রক্রিয়া শুরু করেছে।
প্রধান উপদেষ্টা ইউনূস এই সংকট সমাধানে ২০২৫ সালে একটি বিশেষ আন্তর্জাতিক সম্মেলন আয়োজনের পরিকল্পনা ঘোষণা করেন। জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদ ইতোমধ্যে সম্মেলনের অনুমোদন দিয়েছে, যা রোহিঙ্গা ইস্যুতে টেকসই সমাধানের পথ উন্মোচন করতে পারে বলে আশা করা হচ্ছে।
ড. ইউনূস জানান, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার শেখ হাসিনা সরকারের বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগ আনতে প্রস্তুত। অভিযোগের মধ্যে রয়েছে ১৬ বছরের শাসনকালে জুলাই-আগস্ট আন্দোলনের সময় হাজার হাজার মানুষ হত্যা, গুম এবং নির্যাতনের ঘটনা।
আইসিসি চিফ প্রসিকিউটর করিম খান বলেন, তারা বাংলাদেশে মানবতাবিরোধী অপরাধের তদন্তে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালকে সহযোগিতা করতে চান। শেখ হাসিনা এবং তার দলের নেতাদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি হওয়ার কথাও তিনি উল্লেখ করেন।
প্রধান উপদেষ্টা ইউনূস মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে জাতিসংঘের নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণে সুরক্ষিত অঞ্চল প্রতিষ্ঠার আহ্বান পুনর্ব্যক্ত করেন। তিনি বলেন, এই সুরক্ষিত অঞ্চল বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গাদের মানবিক সহায়তা দিতে এবং তাদের নিজ দেশে ফিরে যাওয়ার উপযুক্ত পরিবেশ তৈরি করতে সহায়ক হবে।
বৈঠকে রোহিঙ্গা বিষয়ক হাই রিপ্রেজেন্টেটিভ ড. খলিলুর রহমান এবং আইসিসি প্রতিনিধিদলের মধ্যে আরও ঘনিষ্ঠ সহযোগিতার বিষয়ে আলোচনা হয়। করিম খান উল্লেখ করেন, বাংলাদেশ রোম সংবিধি স্বাক্ষরকারী প্রথম এশীয় দেশগুলোর একটি এবং আইসিসির সঙ্গে বাংলাদেশ ভবিষ্যতে আরও ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করতে আগ্রহী।
এই বৈঠকটি মানবাধিকার রক্ষায় আন্তর্জাতিক সহযোগিতার এক নতুন দিগন্ত উন্মোচন করবে বলে মনে করা হচ্ছে।