পলাতক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পরিবারের ব্যাংক হিসাব তলব, দুর্নীতির অভিযোগে তদন্ত চলছে
পলাতক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পরিবারের ব্যাংক হিসাব তলব, দুর্নীতির অভিযোগে তদন্ত চলছে
পলাতক সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভাগ্নি টিউলিপ রেজওয়ানা সিদ্দিকসহ পরিবারের ছয়জন সদস্যের ব্যাংক হিসাবের তথ্য চেয়েছে বাংলাদেশ ফাইনান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ)। আজ মঙ্গলবার ব্যাংকগুলোতে আনুষ্ঠানিক চিঠি পাঠিয়ে এ সংক্রান্ত নির্দেশনা দেওয়া হয়।
তলবকৃত ব্যক্তিদের তালিকা
বিএফআইইউর চিঠিতে শেখ হাসিনা, শেখ রেহানা, রাদওয়ান মুজিব সিদ্দিক, সজীব আহমেদ ওয়াজেদ (জয়), সায়মা ওয়াজেদ হোসেন (পুতুল), আজমিনা সিদ্দিক এবং টিউলিপ রেজওয়ানা সিদ্দিকের ব্যাংক লেনদেনের সব ধরনের তথ্য তলব করা হয়েছে।
চিঠিতে উল্লেখ করা হয়েছে, ব্যাংক হিসাব খোলার ফরম, কেওয়াইসি (Know Your Customer), লেনদেন বিবরণীসহ প্রয়োজনীয় তথ্য পাঁচ কার্যদিবসের মধ্যে পাঠাতে হবে। এই তলবের ক্ষেত্রে মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ বিধিমালার প্রাসঙ্গিক ধারা প্রযোজ্য হবে।
টিউলিপ সিদ্দিকের বিরুদ্ধে অভিযোগ
যুক্তরাজ্যের সিনিয়র ট্রেজারি মন্ত্রী টিউলিপ সিদ্দিকের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ উঠে আসার পর তিনি নিজেকে তদন্তের জন্য ব্রিটিশ কর্তৃপক্ষের কাছে সঁপে দিয়েছেন। টিউলিপের বিরুদ্ধে অভিযোগ, তিনি বাংলাদেশে ক্ষমতাচ্যুত সরকারের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট একাধিক সম্পত্তিতে বাস বা ভোগদখল করছেন।
রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্পে ৫ বিলিয়ন ডলারের ঘুষ লেনদেনের অভিযোগও রয়েছে তার বিরুদ্ধে। এই অভিযোগের প্রেক্ষিতে ব্রিটিশ পার্লামেন্টের দুর্নীতিবিরোধী মন্ত্রী টিউলিপ সিদ্দিক ব্রিটিশ মন্ত্রীদের আচরণবিধি পর্যালোচনার জন্য প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা লরি ম্যাগনাসের কাছে তদন্তের আবেদন করেছেন।
শেখ হাসিনার ব্যাংক হিসাব তলব
গত ১০ ডিসেম্বর শেখ হাসিনা ও শেখ রেহানার ব্যাংক হিসাবের তথ্য তলব করে বিএফআইইউ। একই সঙ্গে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মেমোরিয়াল ট্রাস্টের ব্যাংক লেনদেনের তথ্যও চাওয়া হয়।
তাদের আর্থিক লেনদেনের তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখা হচ্ছে, তারা কোনো আর্থিক অপরাধে জড়িত ছিলেন কি না। একই সঙ্গে, ট্রাস্টে প্রাপ্ত অর্থের উৎস এবং অর্থ কী কাজে ব্যবহার করা হয়েছে, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
শেখ হাসিনার নির্বাসন ও রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট
গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের মুখে ভারতে পালিয়ে যান শেখ হাসিনা। এর মাধ্যমে টানা ১৬ বছরের আওয়ামী লীগ সরকারের পতন ঘটে।
এই ঘটনার পর থেকে দেশের আর্থিক খাতের স্বচ্ছতা নিশ্চিত করতে এবং যেকোনো আর্থিক অপরাধ উদঘাটনে ব্যাংক হিসাবের তথ্য তলবের কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে সংশ্লিষ্ট সংস্থা।
শেষ কথা
বাংলাদেশের রাজনীতির ইতিহাসে এমন ঘটনায় নতুন মোড় এসেছে। ক্ষমতাসীন দলের সদস্যদের আর্থিক লেনদেন নিয়ে প্রশ্ন তোলার ফলে ভবিষ্যতে রাজনীতিতে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা প্রতিষ্ঠিত হতে পারে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।