জাতীয় ঐক্য ভাঙনের দায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন এড়াতে পারবে না: ২৮ ছাত্র সংগঠন
জাতীয় ঐক্যের ভাঙনের দায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতৃত্ব এড়াতে পারবে না: ২৮ ছাত্র সংগঠনের সতর্ক বার্তা
জুলাই মাসে ঘটে যাওয়া ঐতিহাসিক গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে যে জাতীয় ঐক্য গড়ে উঠেছিল, তা ভাঙনের মুখে পড়তে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন ছাত্রদলসহ ২৮টি ছাত্র সংগঠনের নেতৃবৃন্দ। তাদের মতে, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতৃত্বের অসামঞ্জস্যপূর্ণ ভূমিকা এবং গোষ্ঠীগত স্বার্থ উদ্ধারের চেষ্টা এর জন্য দায়ী হতে পারে।
বৃহস্পতিবার রাতে ঢাকার কাটাবনে এক মতবিনিময় সভায় এই বক্তব্য তুলে ধরেন ছাত্র সংগঠনের নেতারা। সভায় দেশের বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি, গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা, ছাত্র সংসদ নির্বাচন, এবং শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোর গণতান্ত্রিক পরিবেশ ফিরিয়ে আনার বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমালোচনা:
সভায় নেতৃবৃন্দ উল্লেখ করেন, গণঅভ্যুত্থানের সময় হাজারো ছাত্র-জনতার রক্তের বিনিময়ে যে জাতীয় ঐক্যের ভিত্তি তৈরি হয়েছিল, তা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতৃবৃন্দের কারণে হুমকির মুখে পড়েছে। তারা বলেন,
“অভ্যুত্থানের পর থেকেই বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতারা অন্যান্য ছাত্র সংগঠনগুলোকে বিচ্ছিন্নতার পথে ঠেলে দিয়েছেন। এর ফলে, অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে অর্জিত জাতীয় ঐক্য ভাঙনের শঙ্কা তৈরি হয়েছে। যদি এমনটা ঘটে, এর দায় কোনোভাবেই তারা এড়াতে পারবে না।”
ছাত্র নেতারা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনতে এবং শিক্ষার্থীদের অধিকার প্রতিষ্ঠায় দ্রুত ছাত্র সংসদ নির্বাচন আয়োজনের দাবি জানান। তারা বলেন,
“শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে দখলদারিত্বমুক্ত নিরাপদ পরিবেশ নিশ্চিত করতে হবে। ১৯৭৩ সালের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় আদেশ অনুযায়ী ছাত্র সংসদের গঠনতন্ত্র সংস্কার করে গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে নির্বাচন আয়োজন করতে হবে। এটি শিক্ষার্থীদের অধিকার চর্চা এবং নিরাপদ ক্যাম্পাসের জন্য অপরিহার্য।”
সভায় অংশগ্রহণকারী ছাত্র সংগঠনের নেতারা উসকানির বিষয়ে সতর্ক করে বলেন,
“দেশের ভেতরে এবং বাইরে থেকে বিভিন্ন প্ররোচনা দিয়ে জাতীয় ঐক্যকে ক্ষতিগ্রস্ত করার অপচেষ্টা চলছে। ছাত্রসমাজকে এই উসকানি মোকাবিলা করে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে। জাতীয় স্বার্থে কোনো ধরনের উসকানিতে প্ররোচিত হওয়া যাবে না।”
মতবিনিময় সভায় অংশ নেয়া ২৮টি ছাত্র সংগঠন বিভিন্ন আদর্শিক ও রাজনৈতিক প্ল্যাটফর্ম থেকে একত্রিত হয়। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য সংগঠনগুলো হলো:
- বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল
- বাংলাদেশ ছাত্র ফেডারেশন
- ইসলামী ছাত্র আন্দোলন বাংলাদেশ
- বিপ্লবী ছাত্র মৈত্রী
- বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন
- সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট
- পাহাড়ি ছাত্র পরিষদ
- ভাসানী ছাত্র পরিষদ
২৮টি ছাত্র সংগঠন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ভূমিকার সমালোচনা করলেও, জাতীয় ঐক্য রক্ষা এবং গণতান্ত্রিক পরিবেশ প্রতিষ্ঠার অঙ্গীকার ব্যক্ত করেছে। দেশের রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা রক্ষায় তারা ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করার আহ্বান জানিয়েছেন।জাতীয় ঐক্যের স্বার্থে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা এবং উসকানির মোকাবিলায় ঐক্যবদ্ধ থাকার প্রতিজ্ঞা ছাত্র সংগঠনগুলোর।