ইসরায়েল-হিজবুল্লাহ যুদ্ধবিরতি কার্যকর: প্রশ্নবিদ্ধ শান্তি চুক্তির ভবিষ্যৎ
ইসরায়েল-হিজবুল্লাহ যুদ্ধবিরতি কার্যকর: প্রশ্নবিদ্ধ শান্তি চুক্তির ভবিষ্যৎ
লেবাননের স্থানীয় সময় বুধবার সকালে কার্যকর হওয়ার কথা থাকলেও, যুদ্ধবিরতি শুরু হওয়ার মাত্র কয়েক মিনিট আগে ইসরায়েল ও হিজবুল্লাহর মধ্যে সংঘর্ষের খবর পাওয়া গেছে। তবে এই চুক্তি টিকলে এক বছরেরও বেশি সময় ধরে চলা ইসরায়েল ও ইরান-সমর্থিত হিজবুল্লাহর মধ্যে সংঘাতের অবসান ঘটবে।
যুদ্ধবিরতির শর্ত অনুযায়ী, আগামী ৬০ দিনের মধ্যে ইসরায়েলি সেনারা লেবানন থেকে সরে যাবে। তাদের জায়গায় দক্ষিণ লেবাননে লেবাননের সামরিক বাহিনী মোতায়েন করা হবে। যুদ্ধবিরতির কার্যক্রম তদারকির জন্য যুক্তরাষ্ট্র ও ফ্রান্স বিদ্যমান ত্রিপক্ষীয় ব্যবস্থায় (লেবাননের সামরিক বাহিনী, ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী ও ইউনিফিল) যুক্ত হবে।
ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু এই যুদ্ধবিরতি চুক্তিকে সামরিক কৌশলগত পদক্ষেপ হিসেবে তুলে ধরেছেন। তার বক্তব্যে চুক্তির তিনটি প্রধান কারণ উল্লেখ করা হয়েছে:
- ইরানের হুমকির প্রতি মনোযোগ দেওয়া: ইসরায়েল ইরানের বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার মূল অংশ ধ্বংস করেছে এবং হিজবুল্লাহর ক্ষেপণাস্ত্র ভাণ্ডারকে উল্লেখযোগ্যভাবে দুর্বল করেছে।
- সামরিক বিরতি: ইসরায়েলি সেনাবাহিনী যুদ্ধের ক্লান্তি কাটিয়ে উঠতে এবং অস্ত্র পুনরায় সংগঠিত করতে চায়।
- হামাসকে বিচ্ছিন্ন করা: হিজবুল্লাহকে যুদ্ধ থেকে সরিয়ে দিয়ে গাজার সংঘাতে আরও মনোযোগ দেওয়া সম্ভব হবে।
যুক্তরাষ্ট্রের তত্ত্বাবধানে লেবাননের সামরিক বাহিনী দক্ষিণে ব্লু লাইনের চারপাশে টহল দেবে। ত্রিপক্ষীয় ব্যবস্থায় চুক্তি লঙ্ঘনের অভিযোগ তদারকি করা হবে। যুক্তরাষ্ট্র ও ফ্রান্স লেবাননের সামরিক বাহিনীকে প্রযুক্তিগত ও আর্থিক সহায়তা দেবে।
যুদ্ধবিরতির শর্ত মানা নিয়ে উদ্বেগ রয়েছে। লেবাননের সামরিক বাহিনীর পর্যাপ্ত সম্পদ ও দক্ষতার অভাব চুক্তি কার্যকর করার ক্ষেত্রে একটি বড় চ্যালেঞ্জ। এদিকে ইসরায়েলের বন্দি মুক্তি নিয়ে নেতানিয়াহুর ভূমিকা নিয়ে সমালোচনা উঠেছে।
এই চুক্তির মাধ্যমে ইসরায়েল-হিজবুল্লাহ সংঘাতের সমাপ্তি ঘটলেও, এটি দীর্ঘমেয়াদী শান্তি নিশ্চিত করবে কিনা তা নিয়ে সন্দেহ রয়ে গেছে। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় দক্ষিণ লেবাননের পুনর্গঠনে সহায়তা করার আহ্বান জানিয়েছে, যা এই অঞ্চলে স্থায়ী স্থিতিশীলতা আনতে পারে।