যুক্তরাষ্ট্রের বৈদেশিক সহায়তা স্থগিত: বাংলাদেশে সম্ভাব্য প্রভাব
যুক্তরাষ্ট্রের বৈদেশিক সহায়তা স্থগিত: বাংলাদেশে সম্ভাব্য প্রভাব
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের বৈদেশিক সহায়তা স্থগিতের সিদ্ধান্ত বাংলাদেশসহ সারা বিশ্বে বিরূপ প্রভাব ফেলতে পারে। ট্রাম্প শপথ গ্রহণের দিনই (সোমবার) বৈদেশিক সাহায্য ৯০ দিনের জন্য স্থগিত করেছেন। উন্নয়ন সহযোগী ও সংশ্লিষ্টরা বলছেন, এই সিদ্ধান্ত বাংলাদেশের বিভিন্ন প্রকল্প ও অংশীদারিত্বের ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত করে তুলেছে।
যুক্তরাষ্ট্র-বাংলাদেশ অংশীদারিত্ব
যুক্তরাষ্ট্রের আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সংস্থা (ইউএসএআইডি)-এর তথ্য অনুযায়ী, বাংলাদেশ স্বাধীনতার পর থেকেই যুক্তরাষ্ট্রের কৌশলগত অংশীদার। ইউএসএআইডির বাংলাদেশে পরিচালিত কর্মসূচি এশিয়ার মধ্যে সবচেয়ে বড়। খাদ্য নিরাপত্তা, স্বাস্থ্য, শিক্ষা, গণতন্ত্র ও পরিবেশ সংক্রান্ত বিষয় ছাড়াও রোহিঙ্গা সংকট মোকাবিলায় যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের অন্যতম প্রধান সহায়তাকারী।
২০১৭ সালের আগস্ট থেকে রোহিঙ্গা সংকটে বাংলাদেশকে যুক্তরাষ্ট্র আড়াই শ কোটি ডলারের বেশি সহায়তা দিয়েছে। শুধু ২০২৩ সালেই সহায়তার পরিমাণ ছিল প্রায় ৪৯ কোটি ডলার।
বৈদেশিক সাহায্যের পুনর্মূল্যায়ন
ট্রাম্পের নির্বাহী আদেশ অনুযায়ী, যুক্তরাষ্ট্রের বৈদেশিক সাহায্যের কার্যকারিতা মূল্যায়ন করা হবে। মার্কিন প্রশাসন জানিয়েছে, সাহায্য কর্মসূচিগুলো আমেরিকান স্বার্থ ও মূল্যবোধের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয় এমন কার্যক্রমে আর বিনিয়োগ করা হবে না।
যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও বলেছেন, প্রতিটি নীতি ও অর্থায়নের ক্ষেত্রে তিনটি প্রশ্নের ভিত্তিতে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে:
- এটি যুক্তরাষ্ট্রকে নিরাপদ রাখবে কি?
- এটি যুক্তরাষ্ট্রকে শক্তিশালী করবে কি?
- এটি যুক্তরাষ্ট্রকে সমৃদ্ধ করবে কি?
বাংলাদেশে সম্ভাব্য প্রভাব
বাংলাদেশের জন্য যুক্তরাষ্ট্রের সাহায্য বন্ধ বা স্থগিত হওয়া বড় চ্যালেঞ্জ তৈরি করতে পারে। ইউএসএআইডি ছাড়াও যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন সংস্থা বাংলাদেশে খাদ্য নিরাপত্তা, স্বাস্থ্যসেবা, শিক্ষা ও রোহিঙ্গা সহায়তায় বড় ভূমিকা রাখছে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ট্রাম্পের সিদ্ধান্তের ফলে এসব প্রকল্পের ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত হয়ে পড়বে। তাছাড়া, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও)-তে যুক্তরাষ্ট্রের অর্থায়ন বন্ধ হলে তার প্রভাব সারা বিশ্বে স্বাস্থ্যখাতেও পড়তে পারে।
বাংলাদেশের করণীয়
বাংলাদেশ ট্রাম্প প্রশাসনের এই নীতির প্রয়োগ এবং সম্ভাব্য প্রভাব নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছে। উন্নয়ন সহযোগী সংস্থা এডাব-এর পরিচালক এ কে এম জসীম উদ্দিন বলেছেন, “কোন ক্ষেত্রে এই সিদ্ধান্ত কার্যকর হবে তা বুঝতে হবে।”
বাংলাদেশকে এ পরিস্থিতিতে বিকল্প আন্তর্জাতিক অংশীদার খুঁজে বের করা এবং বৈদেশিক সাহায্যের উপর নির্ভরতা কমানোর পথ খুঁজতে হবে।