তিব্বতে ভয়াবহ ভূমিকম্পে ১২৬ জন নিহত, উদ্ধার তৎপরতা অব্যাহত
তিব্বতে ভয়াবহ ভূমিকম্পে ১২৬ জন নিহত, উদ্ধার তৎপরতা অব্যাহত
তিব্বতে এভারেস্টের কাছাকাছি একটি দুর্গম অঞ্চলে ভয়াবহ ভূমিকম্পে প্রাণ হারিয়েছেন অন্তত ১২৬ জন। মঙ্গলবার সকালে আঘাত হানা এই ৭.১ মাত্রার ভূমিকম্পে আহত হয়েছেন ১৮৮ জন। যুক্তরাষ্ট্রের ভূতাত্ত্বিক জরিপ সংস্থার (ইউএসজিএস) তথ্য অনুযায়ী, ভূমিকম্পটি ১০ কিলোমিটার গভীরে উৎপন্ন হয় এবং এর কম্পন বাংলাদেশ, নেপাল ও ভারতের কিছু অংশেও অনুভূত হয়েছে।
উদ্ধার কার্যক্রম চলছে
ভূমিকম্পের পর পরই চীনা উদ্ধারকর্মীরা ঘটনাস্থলে পৌঁছে কাজ শুরু করেন। ধ্বংসস্তূপের নিচে আটকে পড়া মানুষদের বের করে আনতে উদ্ধারকর্মীরা রাতদিন পরিশ্রম করছেন। তবে পরিস্থিতি আরও কঠিন হয়ে উঠছে কারণ তীব্র শীতের কারণে রাতের তাপমাত্রা মাইনাস ১৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস পর্যন্ত নেমে যেতে পারে।
চীনা বিমানবাহিনী প্রভাবিত এলাকায় ড্রোন পাঠিয়ে উদ্ধার কার্যক্রমে সহায়তা করছে। এ ছাড়া প্রেসিডেন্ট শি চিনপিং উদ্ধার কার্যক্রম দ্রুত সম্পন্ন করতে এবং ক্ষতিগ্রস্তদের পুনর্বাসনে সর্বাত্মক প্রচেষ্টা চালানোর নির্দেশ দিয়েছেন।
অঞ্চলের ধ্বংসযজ্ঞ ও প্রভাব
চীনের রাষ্ট্রীয় সম্প্রচার সংস্থা সিসিটিভি প্রকাশিত ভিডিওতে শিগাতসে অঞ্চলের ধ্বংসপ্রাপ্ত ভবন ও ধসে পড়া ঘরবাড়ি দেখা যায়। উদ্ধারকর্মীরা ধ্বংসস্তূপের মধ্যে দিয়ে হাঁটছেন এবং স্থানীয় বাসিন্দাদের মোটা কম্বল বিতরণ করছেন।
এদিকে, ভূমিকম্পে বিদ্যুৎ ও পানি সরবরাহ ব্যবস্থা ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। প্রথম কয়েক ঘণ্টায় ৪০টিরও বেশি আফটারশক অনুভূত হয়।
পর্যটন কার্যক্রম বন্ধ
এভারেস্টের পাদদেশে অবস্থিত টিংরি কাউন্টি, যেখানে পর্বতারোহীরা শৃঙ্গ আরোহণের প্রস্তুতি নেন, ভূমিকম্পের কারণে সম্পূর্ণ বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। টিংরিতে নির্ধারিত এভারেস্ট দর্শন কার্যক্রমও বাতিল করা হয়েছে এবং নিরাপত্তার জন্য দর্শনার্থীদের অন্যত্র সরিয়ে নেওয়া হয়েছে।
আধ্যাত্মিক নেতাদের শোক প্রকাশ
তিব্বতের নির্বাসিত আধ্যাত্মিক নেতা দালাই লামা ভূমিকম্পে প্রাণহানির ঘটনায় গভীর শোক প্রকাশ করেছেন। এক বিবৃতিতে তিনি বলেছেন, “আমি প্রাণ হারানো ব্যক্তিদের জন্য প্রার্থনা করি এবং আহতদের দ্রুত সুস্থতা কামনা করছি।”
প্রাণহানির দিক থেকে সাম্প্রতিককালের সবচেয়ে ভয়াবহ ভূমিকম্প
এই ভূমিকম্পটি সাম্প্রতিক বছরগুলোর মধ্যে চীনে সবচেয়ে প্রাণঘাতী হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে। প্রায় এক হাজারের বেশি ভবন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এবং আট লাখ জনসংখ্যার শিগাতসে অঞ্চলে বিপর্যস্ত পরিস্থিতি বিরাজ করছে।
চীনের আবহাওয়া প্রশাসনের পূর্বাভাস অনুযায়ী, এই শীতল আবহাওয়ার কারণে ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তিদের জন্য তাপমাত্রা আরও বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে।