সারাদেশ

জুবায়েরপন্থি’ নেতা মামুনুল হক সরাসরি সাদপন্থিদের নিষিদ্ধ করার দাবি জানিয়েছেন

বিশ্ব ইজতেমার মাঠে সাদপন্থি ও জুবায়েরপন্থি অনুসারীদের মধ্যে সংঘর্ষের জেরে উত্তেজনাকর পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে। সংঘর্ষে তিনজন নিহত হয়েছেন, যাদের উভয় পক্ষই নিজেদের অনুসারী বলে দাবি করেছে। এ পরিস্থিতিতে ‘জুবায়েরপন্থি’ নেতা মামুনুল হক সরাসরি সাদপন্থিদের নিষিদ্ধ করার দাবি জানিয়েছেন।

মামুনুল হকের দাবি

মামুনুল হক অভিযোগ করেছেন, সাদপন্থিরা সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে নিজেদের সন্ত্রাসী গোষ্ঠী হিসেবে প্রমাণ করেছে এবং রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়েছে। তিনি বলেন, “তারা যা করেছে, তাতে তাদের আর ইজতেমার কোনো অধিকার থাকতে পারে না। সাদপন্থিদের নিষিদ্ধ ঘোষণা করতে হবে।”

তিনি আরও অভিযোগ করেন, সাদপন্থিরা ইজতেমা মাঠে জোরপূর্বক প্রবেশ করেছিল। এই অনধিকার প্রবেশের ফলে সংঘর্ষের সূত্রপাত হয় এবং প্রাণহানির মতো মর্মান্তিক ঘটনা ঘটে। মামুনুল আরও বলেন, “এই হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে যারা জড়িত, তাদের আজকের মধ্যেই গ্রেপ্তার করতে হবে।”

প্রশাসনের পদক্ষেপ

এ ঘটনার পর প্রশাসন মাঠের পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে কড়া পদক্ষেপ নিয়েছে। ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি) ইজতেমা মাঠ এবং সংলগ্ন এলাকায় সব ধরনের সভা-সমাবেশ, মিছিল, শোভাযাত্রা এবং বিক্ষোভ নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছে। ডিএমপি কমিশনার শেখ মো. সাজ্জাত আলীর স্বাক্ষরিত এক গণবিজ্ঞপ্তিতে কামারপাড়া, আব্দুল্লাহপুর, উত্তরা সেক্টর-১০ এবং তৎসংলগ্ন তুরাগ নদীর দক্ষিণ-পশ্চিম এলাকায় এই নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে।

স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে বৈঠকের পর জুবায়েরপন্থি অনুসারীরা প্রশাসনের নির্দেশ মেনে চলার অঙ্গীকার করেছে। মামুনুল হক বলেন, “পরিস্থিতি শান্ত রাখতে প্রশাসনের নেওয়া পদক্ষেপগুলোতে আমরা সহযোগিতা করব। প্রশাসন আমাদের ইজতেমা যথাযথভাবে সম্পন্ন করতে সহযোগিতা করার আশ্বাস দিয়েছে।”

সংঘর্ষের পটভূমি

ইজতেমা মাঠে সাদপন্থি ও জুবায়েরপন্থিদের দ্বন্দ্ব দীর্ঘদিনের। চলমান উত্তেজনা থেকে এবার সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। সংঘর্ষের পর সাদপন্থিরা ইজতেমা মাঠ ছেড়ে চলে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ নিয়ে সুষ্ঠু তদন্তের দাবি জানিয়েছে জুবায়েরপন্থি নেতারা।

সার্বিক পরিস্থিতি

বর্তমান পরিস্থিতিতে প্রশাসনের কঠোর পদক্ষেপ কিছুটা স্বস্তি আনলেও ইজতেমার পরিবেশ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। সাদপন্থি ও জুবায়েরপন্থি অনুসারীদের এই দ্বন্দ্ব দীর্ঘমেয়াদি সমস্যার দিকেই ইঙ্গিত দিচ্ছে। প্রশাসন ও উভয় পক্ষের সমঝোতায় পরিস্থিতি শান্ত রাখা সম্ভব হবে কিনা, তা সময়ই বলে দেবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button