সারাদেশ

যুক্তরাষ্ট্রের শুল্ক আরোপে উদ্বেগ, ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে দুটি চিঠি দেবে বাংলাদেশ সরকার

যুক্তরাষ্ট্রের শুল্ক আরোপে উদ্বেগ, ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে দুটি চিঠি দেবে বাংলাদেশ সরকার


🖋️ নিজস্ব প্রতিবেদক,

যুক্তরাষ্ট্রের ট্রাম্প প্রশাসন বাংলাদেশ থেকে আমদানি হওয়া পণ্যের ওপর ৩৭ শতাংশ শুল্ক আরোপ করায় উদ্বেগ জানিয়েছে বাংলাদেশ সরকার। এই পরিস্থিতি মোকাবিলায় আগামী ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট এবং বাণিজ্য দপ্তরে দুটি চিঠি পাঠানো হবে বলে জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম।

রবিবার (৬ এপ্রিল) সচিবালয়ে অর্থ উপদেষ্টার দপ্তরে আয়োজিত এক পর্যালোচনা সভা শেষে সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান তিনি।

তিনি বলেন, “একটি চিঠি যাবে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের পক্ষ থেকে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের কাছে, এবং অন্যটি যাবে বাণিজ্য উপদেষ্টার পক্ষ থেকে যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য প্রতিনিধি অফিস ইউএসটিআর-এর উদ্দেশ্যে।”

প্রেস সচিব জানান, “চিঠিতে কী থাকবে তা নিয়ে এখনও আলোচনা চলছে। বৈঠকে উপস্থিত সবাই মতামত দিয়েছেন। বাংলাদেশ কী ধরনের পদক্ষেপ নিতে যাচ্ছে, সেসবই চিঠিতে তুলে ধরা হবে। তবে এটি হবে সম্পূর্ণ ব্যবসাবান্ধব এবং বাংলাদেশের রপ্তানি স্বার্থ সংরক্ষণের লক্ষ্যে প্রণীত।”

✳️ পর্যালোচনা সভায় যারা ছিলেন:

সভায় সভাপতিত্ব করেন অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ। এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন চারজন উপদেষ্টা, চারজন ব্যবসায়ী প্রতিনিধি, প্রধান উপদেষ্টার রোহিঙ্গা সংকট ও অগ্রাধিকারপ্রাপ্ত বিষয়াবলী সংক্রান্ত হাই রিপ্রেজেন্টেটিভ, বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর, বিডার নির্বাহী চেয়ারম্যান ও ১০ জন সচিব।

🔍 অর্থ উপদেষ্টার চার দফা পরিকল্পনা:

বৈঠক শেষে অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ যুক্তরাষ্ট্রের পাল্টা শুল্কের জবাবে বাংলাদেশের চারটি প্রধান পরিকল্পনার কথা জানান:

  1. বাংলাদেশ-যুক্তরাষ্ট্র বাণিজ্য সম্প্রসারণ।
  2. পোশাক খাতের সক্ষমতা বৃদ্ধি, যাতে যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে প্রতিযোগিতায় এগিয়ে থাকা যায়।
  3. যুক্তরাষ্ট্র থেকে শুধু পণ্য নয়, সেবা আমদানিও বাড়ানো হবে।
  4. অশুল্ক বাধা দূরীকরণ, যা করা হবে আনুষ্ঠানিক ও অনানুষ্ঠানিক দুইভাবেই।

🧵 পোশাক খাত বাঁচাতে উদ্যোগ:

পরিকল্পনা উপদেষ্টা ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ বলেন, “বাংলাদেশের তৈরি পোশাক খাতে শ্রমিকের মজুরি বর্তমানে সর্বনিম্ন পর্যায়ে রয়েছে, এটি আর কমানো সম্ভব নয়। তাই উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধির মাধ্যমে খাতটিকে টেকসই করার ওপর জোর দেওয়া হবে।”

ব্যবসায়ী প্রতিনিধি সৈয়দ নাসিম মঞ্জুর বলেন, “সরকারের পদক্ষেপে আমরা আশাবাদী হয়েছি। এখন সময়মতো কার্যকর সিদ্ধান্ত না নিলে বাংলাদেশ পিছিয়ে যাবে।”

তিনি আরও বলেন, “যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে প্রবেশাধিকার রক্ষা করার পাশাপাশি আমাদের বিকল্প রপ্তানি খাতও খুঁজে বের করতে হবে।”

প্রধান উপদেষ্টার হাই রিপ্রেজেন্টেটিভ ড. খলিলুর রহমান জানান, যুক্তরাষ্ট্রে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে তার কথা হয়েছে। ট্রেড রিপ্রেজেন্টেটিভ অফিসের প্রতিক্রিয়া অনুযায়ী, বাংলাদেশের প্রস্তাবনায় ইতিবাচক সাড়া পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।



বাংলাদেশ সরকার যুক্তরাষ্ট্রের শুল্ক আরোপের প্রেক্ষিতে কূটনৈতিক ও অর্থনৈতিকভাবে শক্ত প্রতিক্রিয়া জানাতে প্রস্তুত। সরকার আশাবাদী যে, আলোচনার মাধ্যমে পরিস্থিতি শান্তিপূর্ণভাবে সমাধান হবে এবং রপ্তানি বাজার সুরক্ষিত থাকবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button