সারাদেশ

মঙ্গল শোভাযাত্রায় স্বৈরাচারের মুখোশ! চারুকলার প্রস্তুতি প্রায় শেষ পর্যায়ে

মঙ্গল শোভাযাত্রায় স্বৈরাচারের মুখোশ! চারুকলার প্রস্তুতি প্রায় শেষ পর্যায়ে

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদ আয়োজিত এবারের মঙ্গল শোভাযাত্রার প্রধান মোটিফ হচ্ছে ‘স্বৈরাচারের প্রতিকৃতি’। দাঁতাল মুখ, মাথায় খাড়া দুটি শিং এবং চেহারায় নারীর আদলে নির্মিত দৈত্যাকৃতির এই অবকাঠামোটি ফ্যাসিবাদের প্রতীক হিসেবে প্রদর্শিত হবে বাংলা নববর্ষ ১৪৩২-এর শোভাযাত্রায়।

চারুকলা অনুষদ সূত্রে জানা গেছে, এবারের মঙ্গল শোভাযাত্রার মূল প্রতিপাদ্য—‘নববর্ষের ঐকতান, ফ্যাসিবাদের অবসান’। সময়, ইতিহাস ও সমকালীন চেতনা ধারণ করেই পরিকল্পনা সাজানো হয়েছে। এবার মোট পাঁচটি ত্রিমাত্রিক মোটিফ প্রদর্শিত হবে—স্বৈরাচারের মুখোশ ছাড়াও থাকছে একটি বিশাল ইলিশ মাছ, বাংলার ঐতিহ্যবাহী কাঠের বাঘ, শান্তির প্রতীক পায়রা এবং মীর মুগ্ধ স্মরণে পানির বোতল।

প্রধান মোটিফের উচ্চতা হবে প্রায় ২০ ফুট, অন্যগুলো ১৬ ফুট পর্যন্ত। এইসব অবকাঠামো নির্মাণের কাজ ৭০ শতাংশ শেষ হয়ে গেছে। ছুটি শেষে ৬ এপ্রিল বিশ্ববিদ্যালয় খোলার পর শিক্ষার্থীদের যুক্ত করে কাজ সম্পন্ন করা হবে।

চারুকলার ডিন আজহারুল ইসলাম কালের কণ্ঠকে জানান, “এবার আয়োজনটি আরও অন্তর্ভুক্তিমূলক হবে। দেশের খ্যাতিমান শিল্পীদের একত্রে যুক্ত করে এক বৃহত্তর কর্মশালার আয়োজন করা হচ্ছে।”

শোভাযাত্রায় অন্যান্য বছর যেমন হাতি, বাঘ, পেঁচাসহ মুখোশ থাকত, এবারও থাকছে। থাকবে লোকজ মোটিফ, চরকির মতো কাগজের ফুল, মোগল মিনিয়েচার মুখোশ, এবং সুলতানি আমলের অনুপ্রেরণায় নির্মিত উপাদান।

চারুকলা অনুষদের দেয়াল সাজানো হচ্ছে রাজশাহীর ঐতিহ্যবাহী শখের হাঁড়ির নকশায়। ইতিমধ্যেই দেয়ালে হলুদ প্রলেপ দেওয়া হয়েছে, এর ওপর শিল্পীরা ফুল-পাখি-লতাপাতার ডিজাইন আঁকবেন।

এছাড়া বাংলা বছরের শেষ দিন—চৈত্রসংক্রান্তিতে চারুকলার বকুলতলায় বিকেল ৪টা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত থাকবে নাচ-গানের জমজমাট অনুষ্ঠান।

তবে এ বছরের শোভাযাত্রার নাম নিয়ে কিছু অনিশ্চয়তা রয়েছে। ‘মঙ্গল শোভাযাত্রা’ নামটি থাকবে কি না, তা নিয়ে ৬ এপ্রিল বিশ্ববিদ্যালয়ের সভায় চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button