গরমকালে কী খাবেন আর কী এড়িয়ে যাবেন? গরমকালে করণীয়: শরীরকে সুস্থ ও সতেজ রাখার উপায়

গরমকালে কী খাবেন আর কী এড়িয়ে যাবেন? গরমকালে করণীয়: শরীরকে সুস্থ ও সতেজ রাখার উপায়
গ্রীষ্মকালের প্রচণ্ড গরমে শরীর সুস্থ রাখতে খাদ্যাভ্যাসের দিকে বিশেষ মনোযোগ দেওয়া জরুরি। এ সময় সঠিক খাবার গ্রহণ করলে শরীর ঠান্ডা থাকে এবং ডিহাইড্রেশন থেকে রক্ষা পাওয়া যায়। তবে কিছু খাবার এড়িয়ে না চললে গরমে নানা শারীরিক সমস্যা দেখা দিতে পারে।
গরমকালে যা খাবেন:
✅ পানি ও হাইড্রেটিং পানীয়: প্রতিদিন পর্যাপ্ত পরিমাণ পানি পান করুন। ডাবের পানি, লেবু-পানি, ওরস্যালাইন, শসার রস, এবং তাজা ফলের রস শরীরকে হাইড্রেটেড রাখতে সাহায্য করে।
✅ তরলসমৃদ্ধ ফল: তরমুজ, বাঙ্গি, শসা, পেঁপে, আনারস, কমলা, আঙুরের মতো জলীয় ফল খান, যা শরীরের পানির ঘাটতি পূরণ করে।
✅ হালকা ও পুষ্টিকর খাবার: গরমকালে বেশি তেল-ঝাল খাবার এড়িয়ে হালকা খাবার যেমন সেদ্ধ ডাল, ভাত, শাকসবজি, দই, এবং সালাদ খাওয়া ভালো।
✅ হালকা প্রোটিন: মুরগির মাংস, মাছ, ডাল, সয়া, দই, এবং বাদামের মতো হালকা প্রোটিন গ্রহণ করুন, যা সহজে হজম হয় এবং শরীরে শক্তি যোগায়।
✅ হালকা মসলাযুক্ত খাবার: খুব বেশি ঝাল ও মশলাযুক্ত খাবার না খেয়ে হালকা মসলাযুক্ত খাবার খান, যা সহজে হজম হয়।
গরমকালে যা এড়িয়ে চলবেন:
❌ ভাজাপোড়া ও ফাস্টফুড: অতিরিক্ত তেল, ভাজাপোড়া ও ফাস্টফুড গরমকালে এড়িয়ে চলাই ভালো, কারণ এগুলো হজমে সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে এবং শরীর গরম করে তোলে।
❌ কোল্ড ড্রিংকস ও সফট ড্রিংকস: কোল্ড ড্রিংকস বা অতিরিক্ত চিনি মিশ্রিত পানীয় শরীরের পানির ঘাটতি বাড়ায় ও হজমের সমস্যা তৈরি করতে পারে।
❌ অতিরিক্ত ক্যাফেইন ও চা-কফি: বেশি চা-কফি পান করলে শরীর ডিহাইড্রেট হতে পারে এবং অতিরিক্ত ঘাম হওয়া বেড়ে যেতে পারে।
❌ অতিরিক্ত ঝাল ও মসলাযুক্ত খাবার: বেশি ঝাল ও মশলাযুক্ত খাবার শরীরের তাপমাত্রা বাড়িয়ে দিতে পারে, যা গরমকালে অস্বস্তিকর হতে পারে।
❌ দুর্বল বা বাসি খাবার: গরমে খাবার দ্রুত নষ্ট হয়ে যায়, তাই বাসি বা অল্প নষ্ট হয়ে যাওয়া খাবার খেলে ফুড পয়জনিং হতে পারে।
গরমে সুস্থ থাকতে পর্যাপ্ত পানি পান করুন, হালকা খাবার খান এবং ভারী, অতিরিক্ত ঝাল-তেলযুক্ত খাবার এড়িয়ে চলুন। শরীর ঠান্ডা রাখতে ঘন ঘন পানি পান করুন এবং সঠিক খাবার বেছে নিন।
গ্রীষ্মকালের তীব্র গরমে শরীর সুস্থ ও স্বাভাবিক রাখতে কিছু বিশেষ নিয়ম মেনে চলা জরুরি। অতিরিক্ত গরম ও ঘামের কারণে পানিশূন্যতা, হিট স্ট্রোক, ত্বকের সমস্যা এবং অন্যান্য শারীরিক অসুবিধা দেখা দিতে পারে। তাই এই সময় কিছু সতর্কতা অবলম্বন করা প্রয়োজন।
✅ গরমকালে যেসব বিষয় মেনে চলা উচিত:
1️⃣ পর্যাপ্ত পানি পান করুন:
- প্রতিদিন ৮-১০ গ্লাস পানি পান করুন।
- ডাবের পানি, লেবু-পানি, ফলের রস এবং তরল খাবার বেশি গ্রহণ করুন।
- অতিরিক্ত ঠান্ডা বা বরফ মেশানো পানি এড়িয়ে চলুন।
2️⃣ হালকা ও পুষ্টিকর খাবার খান:
- তরমুজ, শসা, বাঙ্গি, আনারস, পেঁপের মতো জলীয় ফল বেশি খান।
- ভাজাপোড়া ও অতিরিক্ত তেল-মসলাযুক্ত খাবার এড়িয়ে চলুন।
- দই, সালাদ, শাকসবজি ও সহজপাচ্য খাবার গ্রহণ করুন।
3️⃣ সূর্যের প্রখরতা থেকে বাঁচুন:
- সকাল ১১টা থেকে বিকেল ৩টার মধ্যে রোদে বের হওয়া এড়িয়ে চলুন।
- বাইরে গেলে ছাতা, ক্যাপ বা স্কার্ফ ব্যবহার করুন।
- সানগ্লাস এবং সানস্ক্রিন (SPF ৩০+) ব্যবহার করুন।
4️⃣ পর্যাপ্ত বিশ্রাম নিন:
- প্রতিদিন কমপক্ষে ৬-৮ ঘণ্টা ঘুমান।
- দুপুরের দিকে অতিরিক্ত কাজ না করে শরীরকে বিশ্রাম দিন।
5️⃣ হালকা ও আরামদায়ক পোশাক পরুন:
- সুতি বা লিনেনের মতো হালকা, ঢিলেঢালা ও বাতাস চলাচলযোগ্য পোশাক পরুন।
- গাঢ় রঙের কাপড়ের পরিবর্তে হালকা রঙের পোশাক পরুন।
6️⃣ ব্যায়াম ও শারীরিক পরিশ্রমের সময় ঠিক করুন:
- সকাল বা সন্ধ্যায় হালকা ব্যায়াম করুন, কারণ গরমের মধ্যে ভারী ব্যায়াম করলে শরীর ক্লান্ত হয়ে যেতে পারে।
- বেশি ঘাম হলে শরীরে পানি ও লবণের ভারসাম্য বজায় রাখার জন্য ওরস্যালাইন পান করুন।
7️⃣ বাইরের দূষণ ও ধুলাবালি থেকে সতর্ক থাকুন:
- ধুলাবালির কারণে অ্যালার্জি বা ত্বকের সমস্যা হতে পারে, তাই বাইরে গেলে মাস্ক ব্যবহার করুন।
- বাইরে থেকে এসে হাত-মুখ ধুয়ে নিন এবং প্রয়োজনে ঠান্ডা পানিতে স্নান করুন।
8️⃣ বৈদ্যুতিক যন্ত্রপাতির অতিরিক্ত ব্যবহারে সতর্কতা:
- ফ্যান, এসি বা কুলার ব্যবহারের সময় মাঝে মাঝে দরজা-জানালা খুলে বায়ু চলাচল নিশ্চিত করুন।
- অতিরিক্ত এসির ব্যবহার এড়িয়ে চলুন, কারণ হঠাৎ ঠান্ডা পরিবেশ থেকে গরমে বের হলে শারীরিক সমস্যা হতে পারে।
❌ গরমকালে যা এড়িয়ে চলবেন:
❌ অতিরিক্ত গরমে সরাসরি রোদে হাঁটা।
❌ অতিরিক্ত চা, কফি ও ক্যাফেইনযুক্ত পানীয়।
❌ কোল্ড ড্রিংকস ও অতিরিক্ত বরফযুক্ত পানীয়।
❌ বাসি বা খোলা জায়গায় রাখা নষ্ট হয়ে যাওয়া খাবার।
❌ বেশি ভাজাপোড়া ও তেল-মসলাযুক্ত খাবার।
❌ রাত জাগা ও অনিয়মিত ঘুম।
গরমকালে সুস্থ থাকতে হলে পর্যাপ্ত পানি পান করা, হালকা খাবার গ্রহণ করা, সঠিক পোশাক পরা এবং রোদ থেকে বাঁচার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া জরুরি। এই নিয়মগুলো মেনে চললে গরমকাল অনেকটাই আরামদায়ক হয়ে উঠবে।