ঢাকায় পাহাড়ি শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার প্রতিবাদে উত্তাল বিভিন্ন জেলা
ঢাকায় পাহাড়ি শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার প্রতিবাদে উত্তাল বিভিন্ন জেলা
রাজধানীর মতিঝিলে জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের (এনসিটিবি) সামনে পাহাড়ি শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার ঘটনায় সারাদেশে বিক্ষোভ ও প্রতিবাদ কর্মসূচি পালন করা হচ্ছে।
ঢাকায় সংঘর্ষের ঘটনা
গতকাল বৃহস্পতিবার রাজধানীর শিক্ষা ভবনের সামনে ‘সংক্ষুব্ধ ছাত্র-জনতা’র ব্যানারে একদল বিক্ষোভকারী সচিবালয়ের দিকে যাওয়ার চেষ্টা করলে পুলিশ লাঠিচার্জ ও জলকামান নিক্ষেপ করে। এতে ছয় শিক্ষার্থীসহ সাতজন আহত হন।
এ ঘটনার প্রতিবাদ জানিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে প্রতিবাদ সমাবেশ করেন।
পার্বত্য জেলায় বিক্ষোভ ও অবরোধ
খাগড়াছড়ি:
ঘটনার নিন্দা জানিয়ে পাহাড়ি শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেছে। দোষীদের দ্রুত গ্রেপ্তারের দাবি জানিয়ে খাগড়াছড়ি শহরে প্রতিবাদ কর্মসূচি পালন করা হয়।
রাঙামাটি:
রাঙামাটিতে শহরের রাজবাড়ি জিমনেসিয়াম থেকে একটি বিক্ষোভ মিছিল বের হয়, যা শহরের প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে সড়ক অবরোধের মাধ্যমে সমাবেশে রূপ নেয়। এতে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।
বান্দরবান:
বান্দরবানের রাজার মাঠ থেকে বিক্ষোভ মিছিল বের হয়ে শহরের প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে। পরে শহীদ আবু সাঈদ মুক্তমঞ্চে প্রতিবাদ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।
পাহাড়ি নেতাদের দাবি
সমাবেশে বক্তারা পাঁচ দফা দাবি তুলে ধরেন:
- হামলায় জড়িতদের আইনের আওতায় আনা।
- আহতদের চিকিৎসার ব্যয় সরকারকে বহন করা।
- পাঠ্যপুস্তক থেকে বাতিল হওয়া গ্রাফিতি পুনর্বহাল করা।
- পাহাড়ি জনগোষ্ঠীর সঠিক ইতিহাস পাঠ্যপুস্তকে অন্তর্ভুক্ত করা।
- সংবিধানে পাহাড়ি জনগোষ্ঠীর স্বীকৃতি প্রদান।
গ্রেপ্তার ও আদালতের আদেশ
মতিঝিল থানার সংঘর্ষের ঘটনায় সন্দেহভাজন হিসেবে গ্রেপ্তার আরিফ আল খবির ও মো. আব্বাসকে আদালতে হাজির করা হলে তাঁদের কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন বিচারক।
সরকারের নিন্দা ও তদন্তের নির্দেশ
অন্তর্বর্তী সরকার ঘটনাটির তীব্র নিন্দা জানিয়ে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছে। প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং থেকে জানানো হয়, হামলার সঙ্গে জড়িত অন্যান্যদের দ্রুত গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।
পাহাড়ি শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার ঘটনাকে কেন্দ্র করে দেশব্যাপী প্রতিবাদ বিক্ষোভ চলছে। দ্রুত তদন্ত ও দোষীদের বিচারের মাধ্যমে পরিস্থিতি শান্ত করার আহ্বান জানিয়েছেন নেতৃবৃন্দ।
[প্রতিবেদনটি প্রস্তুত করেছেন রাঙামাটি, খাগড়াছড়ি ও বান্দরবান প্রতিনিধিরা।]