জামায়াতে ইসলামীর আমিরের বক্তব্য: আওয়ামী লীগের অধ্যায় শেষ এবং স্বৈরশাসনের সমালোচনা
জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান সম্প্রতি ঠাকুরগাঁও এবং দিনাজপুরে আয়োজিত কর্মী সম্মেলন ও সভায় আওয়ামী লীগ এবং দেশের সাম্প্রতিক রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে কঠোর সমালোচনা করেন। তিনি দাবি করেন, আওয়ামী লীগ একটি “ডামি সরকার” হিসেবে কাজ করছে, যা সামান্য চাপেই ভেঙে পড়েছে। তাঁর মতে, “আওয়ামী লীগের অধ্যায় শেষ, কারণ পৃথিবীতে স্বৈরশাসকরা পালিয়ে গেলে ফিরে আসার উদাহরণ নেই।”
ঠাকুরগাঁওয়ের সরকারি বালক উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে জেলা জামায়াতের কর্মী সম্মেলনে বক্তৃতাকালে ডা. শফিকুর রহমান বলেন, বিজয় দিবসে ভারতের প্রধানমন্ত্রী যখন টুইটে বিজয়ের কৃতিত্ব দাবি করেন, তখন বাংলাদেশ বা মুক্তিযুদ্ধের কথা উল্লেখ করেননি। এ প্রসঙ্গে তিনি প্রশ্ন করেন, “যাঁরা চেতনার কথা বলেন, তাঁদের চেতনা তখন কোথায় ছিল?” সীমান্তে ফেলানির লাশ ঝুলে থাকা এবং অন্যান্য সীমান্ত হত্যার প্রসঙ্গ তুলে তিনি দেশের চেতনার ধারণা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন।
তিনি ১৯৭২ সালের ১০ জানুয়ারি থেকে বর্তমান সময় পর্যন্ত ঘটে যাওয়া সব ঘটনাগুলোর সুষ্ঠু তদন্ত দাবি করেন। জামায়াতের পক্ষ থেকে তিনি এ বিষয়ে একটি শ্বেতপত্র প্রকাশের আহ্বান জানান এবং বলেন, “যদি আমি নিজেও দোষী প্রমাণিত হই, তাহলে আমাকে কখনো ক্ষমা করা না হয়।”
টাকা পাচারের অভিযোগ ও দেশের প্রতি বিশ্বস্ততা
দিনাজপুরের বীরগঞ্জ সরকারি কলেজ মাঠে আয়োজিত আরেক সভায় ডা. শফিকুর রহমান দাবি করেন, গত সাড়ে ১৫ বছরে ২৬ লাখ কোটি টাকা দেশের বাইরে পাচার হয়েছে। তিনি অভিযোগ করেন, যারা বিদেশে পালিয়েছে, তারা এই পাচার করা টাকার পেছনেই লুকিয়ে রয়েছে।
তিনি আরও বলেন, “জামায়াতের ১১ জন শীর্ষ নেতার মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হলেও দলের কেউ দেশ ছেড়ে পালায়নি। এটি তাদের দেশের প্রতি বিশ্বস্ততার অনন্য উদাহরণ।”
তরুণদের প্রতি আহ্বান
তরুণ সমাজের ভূয়সী প্রশংসা করে জামায়াতের আমির বলেন, অতীতে ছাত্রসমাজ স্বৈরশাসনের পতন ঘটাতে অগ্রণী ভূমিকা পালন করেছে। তাঁদের নেতৃত্বেই দেশের ভবিষ্যৎ রচনা সম্ভব বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
ডা. শফিকুর রহমানের বক্তব্যগুলো থেকে দলটির বর্তমান রাজনৈতিক অবস্থান এবং ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা স্পষ্ট হয়। তিনি আওয়ামী লীগের সমালোচনার পাশাপাশি তরুণদের উদ্বুদ্ধ করে তাঁদের ভবিষ্যৎ নেতৃত্বের দিকে এগিয়ে যাওয়ার আহ্বান জানান।