সাহিত্য সমাহারের ৬ষ্ঠ প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী ও গুণীজন সম্মাননা উদযাপন
সাহিত্য সমাহারের ৬ষ্ঠ প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী ও গুণীজন সম্মাননা উদযাপন
যশোরের চৌগাছায় সাহিত্য সমাহারের ৬ষ্ঠ প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদযাপনের মাধ্যমে সাহিত্যপ্রেমীদের জন্য একটি স্মরণীয় দিনের আয়োজন করা হয়। শুক্রবার, ২৭ ডিসেম্বর, বেলা ১১টায় তরিকুল ইসলাম পৌর কলেজ মিলনায়তনে এ অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়। দিনব্যাপী এই আয়োজনে ছিল সাহিত্য আলোচনা, গুণীজন সম্মাননা প্রদান, এবং কবিতা পাঠের আসর।
অনুষ্ঠানের শুরুতেই সাহিত্য সমাহারের পক্ষ থেকে চারজন বিশিষ্ট গুণীজনকে সম্মাননা ক্রেস্ট প্রদান করা হয়। তারা হলেন—অধ্যাপক ড. হাবিবুর রহমান, কবি ও গবেষক বেনজীন খান, কথাসাহিত্যিক চঞ্চল শাহরিয়ার এবং কবি দীপক কুমার সাহা। গুণী ব্যক্তিদের এই সম্মাননা প্রদান অনুষ্ঠানে সাহিত্য সমাহারের স্বপ্নদ্রষ্টা আবু রাসেলের সার্বিক তত্ত্বাবধানে এবং প্রভাষক শামীম হোসেনের সভাপতিত্বে একটি হৃদয়গ্রাহী পরিবেশ সৃষ্টি হয়।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন বিশিষ্ট লেখক ও গবেষক অধ্যাপক ড. হাবিবুর রহমান। তিনি সাহিত্যচর্চার গুরুত্ব এবং নতুন প্রজন্মকে সাহিত্যের প্রতি উৎসাহী করার বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ দিকনির্দেশনা দেন। প্রধান আলোচক হিসেবে কবি ও গবেষক বেনজীন খান সাহিত্যের গভীরতা এবং এর প্রাসঙ্গিকতা নিয়ে আলোকপাত করেন। বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন কথাসাহিত্যিক চঞ্চল শাহরিয়ার এবং মহেশপুর সাহিত্য পরিষদের সহ-সভাপতি কবি দীপক কুমার সাহা।
আলোচনায় অংশ নেন আরও অনেকে, যাঁদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য ছিলেন চৌগাছা সরকারি কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ কবি জাহিদুর রহমান বকুল, তরিকুল ইসলাম পৌর কলেজের অধ্যক্ষ মঞ্জুরুল আলম লিটু, যশোর আব্দুর রাজ্জাক কলেজের সহকারী অধ্যাপক অহিদুল ইসলাম, কবি আব্দুল জলিল, সাবেক ব্যাংক কর্মকর্তা আলী বক্স, এবং সাহিত্য সমাহারের প্রতিষ্ঠাতা আবু রাসেল।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন যশোর ও আশপাশের বিভিন্ন অঞ্চলের সাহিত্যিক ও কবিগণ। তাঁদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য ছিলেন সাংবাদিক মুকুরুল ইসলাম মিন্টু, কবি জাহিদ আক্কাস, মাতৃভাষা গণগ্রন্থাগারের সভাপতি এম কে টুটুল, মহেশপুর সাহিত্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদক কবি নিখিল পাল, কবি মিঠু হাফিজ, কবি শুভ জিত দত্ত, কবি আব্দুর রহিম, এবং কবি কামরুল ইসলাম।
আলোচনা সভার পর জুমার নামাজ ও দুপুরের বিরতির পরে শুরু হয় কবিতা পাঠের আসর। বিভিন্ন উপজেলা থেকে আগত কবিগণ তাঁদের স্বরচিত কবিতা আবৃত্তি করেন। এই পর্বটি উপস্থিত সাহিত্যপ্রেমীদের জন্য ছিল এক গভীর সাংস্কৃতিক অভিজ্ঞতা।
উপস্থিত অতিথিদের সার্বিক সহযোগিতায় অনুষ্ঠানটি সাফল্যের সাথে পরিচালিত হয়। পুরো অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন সাহিত্য সমাহারের মহিলা সম্পাদিকা উর্মি রহমান।
সাহিত্য সমাহারের এই আয়োজন শুধু একটি অনুষ্ঠান ছিল না; এটি ছিল সাহিত্যপ্রেমীদের এক মিলনমেলা, যা নতুন লেখকদের উৎসাহিত করেছে এবং সাহিত্যচর্চার প্রতি সাধারণ মানুষের আগ্রহ বাড়িয়েছে।