ঢাবির সাবেক উপাচার্য ড. আরেফিন সিদ্দিকের অবস্থা সংকটাপন্ন

ঢাবির সাবেক উপাচার্য ড. আরেফিন সিদ্দিকের অবস্থা সংকটাপন্ন
ঢাকা, ১০ মার্চ ২০২৫: রাজধানীর ইব্রাহিম কার্ডিয়াক হাসপাতালে লাইফ সাপোর্টে থাকা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ড. আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিকের শারীরিক অবস্থা আরও অবনতি হয়েছে। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, ব্রেইন ডেথের (মস্তিষ্কের কার্যকারিতা বন্ধ) লক্ষণগুলো তার শরীরে স্পষ্টভাবে বিদ্যমান। ফলে তার জীবন নিয়ে শঙ্কা প্রকাশ করেছেন চিকিৎসকরা।
চিকিৎসকরা যা বলছেন
রবিবার (৯ মার্চ) রাতে হাসপাতালের মেডিকেল বোর্ডের এক সদস্য গণমাধ্যমকে জানান, “ব্রেইন ডেথের ক্ষেত্রে সাধারণত যেসব উপসর্গ দেখা যায়, অধ্যাপক আরেফিন সিদ্দিকের মধ্যে তার সবগুলোই বিদ্যমান। হয়তো শিগগিরই তাকে আনুষ্ঠানিকভাবে ব্রেন ডেথ ঘোষণা করা হবে। তবে এ সিদ্ধান্ত পুরোপুরি পরিবারের ওপর নির্ভর করছে। লাইফ সাপোর্ট কমিয়ে দিলে মাত্র পাঁচ সেকেন্ডের মধ্যেই তার শারীরিক কার্যক্রম সম্পূর্ণভাবে থেমে যাবে।”
তিনি আরও বলেন, “এই মুহূর্তটি পরিবারের জন্য অত্যন্ত কঠিন। সাধারণত স্বজনরা শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত আশা করেন, হয়তো অলৌকিক কিছু ঘটবে। কিন্তু তার ক্ষেত্রে এমন সম্ভাবনা আমরা দেখছি না। তিনি ধীরে ধীরে চলে যাচ্ছেন।”
হৃদযন্ত্র এখনও সচল, তবে অবস্থা জটিল
চিকিৎসকদের মতে, ব্রেন ডেথ হলে সাধারণত হৃদযন্ত্র লাইফ সাপোর্টের মাধ্যমে কিছুক্ষণ সচল থাকে। তবে সাপোর্ট কমিয়ে দিলেই হৃদস্পন্দন থেমে যাবে। হাসপাতাল সূত্র জানায়, অধ্যাপক আরেফিন সিদ্দিকের মস্তিষ্কের কার্যকারিতা পুরোপুরি বন্ধ হয়ে যাওয়ায় অস্ত্রোপচার সম্ভব হচ্ছে না। তার হৃদযন্ত্রের অবস্থাও ক্রমশ দুর্বল হয়ে পড়ছে।
এদিকে, তার রক্তে প্লাটিলেটের পরিমাণ কমে ৪৮ হাজারে নেমে এসেছে, যা আরও বিপজ্জনক পরিস্থিতি তৈরি করেছে। হৃদযন্ত্র সচল রাখতে তাকে নতুন ওষুধ দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
কি হয়েছিল অধ্যাপক আরেফিন সিদ্দিকের?
গত বৃহস্পতিবার (৭ মার্চ) ঢাকা ক্লাবে (রমনা) এক অনুষ্ঠানে যোগ দেওয়ার সময় অসুস্থ হয়ে পড়েন অধ্যাপক আরেফিন সিদ্দিক। তিনি দাঁড়িয়ে কথা বলার সময় হঠাৎ মাটিতে পড়ে যান। সঙ্গে সঙ্গে তাকে ইব্রাহিম কার্ডিয়াক হাসপাতালে নেওয়া হয়। প্রথমে সাধারণ চিকিৎসার পর তাকে নিউরো আইসিইউতে স্থানান্তর করা হয়। পরে অবস্থার আরও অবনতি হলে লাইফ সাপোর্ট দেওয়া হয়।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এই বিশিষ্ট শিক্ষাবিদের শারীরিক অবস্থার খবরে শিক্ষার্থী, শিক্ষক ও শুভাকাঙ্ক্ষীদের মধ্যে গভীর উদ্বেগ তৈরি হয়েছে। সবাই তার জন্য প্রার্থনা করছেন।