খালেদা জিয়ার উন্নত চিকিৎসার জন্য লন্ডন যাত্রা আগামীকাল
খালেদা জিয়ার উন্নত চিকিৎসার জন্য লন্ডন যাত্রা আগামীকাল
বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া উন্নত চিকিৎসার জন্য আগামীকাল ৭ জানুয়ারি (মঙ্গলবার) যুক্তরাজ্যের রাজধানী লন্ডনের উদ্দেশে ঢাকা ত্যাগ করবেন। কাতারের আমির শেখ তামিম বিন হামাদ আল থানির বিশেষ ব্যবস্থায় রাজকীয় এয়ার অ্যাম্বুল্যান্সে করে তিনি লন্ডনে যাবেন বলে বিএনপি সূত্র নিশ্চিত করেছে।
লন্ডনে চিকিৎসা ও পারিবারিক সাক্ষাৎ
লন্ডনে পৌঁছানোর পর খালেদা জিয়া সাত বছর পর তাঁর বড় ছেলে, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সঙ্গে সাক্ষাৎ করবেন। তারেক রহমান ছাড়াও তাঁর স্ত্রী ডা. জুবাইদা রহমান এবং মেয়ে জাইমা রহমানও খালেদা জিয়ার জন্য অপেক্ষা করছেন। দীর্ঘদিন পর পরিবারের সঙ্গে দেখা হওয়ায় আবেগঘন পরিবেশ সৃষ্টি হবে বলে আশা করা হচ্ছে।
চিকিৎসার জন্য যুক্তরাষ্ট্রে যাওয়ার পরিকল্পনা
লন্ডনে কিছুদিন অবস্থানের পর খালেদা জিয়া চিকিৎসার জন্য যুক্তরাষ্ট্রে যাবেন। জনস হপকিনস বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালের চিকিৎসকদের তত্ত্বাবধানে সেখানে তাঁর লিভার প্রতিস্থাপন করার কথা রয়েছে। চিকিৎসকদের মতে, লিভার প্রতিস্থাপন সম্পন্ন হলে পুরো চিকিৎসা প্রক্রিয়া শেষ হতে কয়েক মাস সময় লাগতে পারে।
রাজনৈতিক দৃষ্টিকোণ নয়, চিকিৎসাই অগ্রাধিকার
বিএনপি নেতারা জানিয়েছেন, খালেদা জিয়ার বিদেশযাত্রা শুধুই চিকিৎসার জন্য। কোনো রাজনৈতিক উদ্দেশ্য এতে নেই। তবে তিনি কবে দেশে ফিরবেন, সে বিষয়ে কোনো সুনির্দিষ্ট ধারণা দিতে পারেননি দলের দায়িত্বশীল নেতারা।
বিদেশযাত্রার প্রাক্কালে খালেদা জিয়া দলের নেতাকর্মীদের ঐক্যবদ্ধ থেকে গণতন্ত্রের পক্ষে কাজ করার আহ্বান জানিয়েছেন। রবিবার রাতে গুলশানের বাসভবন ফিরোজায় দলের জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্যরা তাঁর সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন।
খালেদা জিয়ার বিদেশযাত্রার প্রস্তুতি কয়েক মাস ধরে চলছিল। এর মধ্যে নতুন পাসপোর্ট প্রস্তুত করা হয় এবং যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্র ও সৌদি আরবের ভিসা নেওয়া হয়। চিকিৎসার জন্য তাঁর শারীরিক অবস্থা উপযোগী করার পর এয়ার অ্যাম্বুল্যান্সে ভ্রমণের সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত হয়।
উল্লেখ্য, ২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি দুর্নীতির দুই মামলায় দণ্ডিত হয়ে কারাবন্দি হন খালেদা জিয়া। ২০২০ সালের মার্চে সরকার শর্তসাপেক্ষে তাঁকে সাময়িক মুক্তি দেয়। এরপর থেকে তিনি গুলশানের বাসভবনে অবস্থান করছিলেন। এ সময়ে একাধিকবার এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নিয়েছেন।
দীর্ঘমেয়াদি চিকিৎসার সম্ভাবনা
খালেদা জিয়ার বয়স ৮০ বছর। লিভার সিরোসিস ছাড়াও তিনি কিডনি, হার্ট, ডায়াবেটিস এবং আর্থ্রাইটিসসহ নানা জটিলতায় ভুগছেন। চিকিৎসা শেষ হলে লন্ডন থেকে দেশে ফেরার পথে তিনি সৌদি আরবে পবিত্র ওমরাহ পালন করতে পারেন বলে দলের সূত্র জানিয়েছে।
এবারের বিদেশযাত্রা শুধুমাত্র চিকিৎসার জন্য হলেও এটি নিয়ে জনমনে ব্যাপক কৌতূহল রয়েছে। খালেদা জিয়ার দ্রুত সুস্থতা কামনায় দলের নেতাকর্মী এবং সমর্থকরা প্রার্থনা করছেন।