সারাদেশ

জনপ্রশাসনে সংস্কারের প্রস্তাব জমা দিল বিএনপি

এই প্রস্তাব জনগণের আকাঙ্ক্ষা পূরণে প্রশাসনকে আরো কার্যকর, স্বচ্ছ এবং সেবামুখী করতে সহায়তা করবে।

বিএনপি প্রশাসন সংস্কারের লক্ষ্যে পেশাদারিত্ব নিশ্চিত করার জন্য একটি সুপারিশমালা প্রস্তুত করেছে, যা রবিবার (১৫ ডিসেম্বর) জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব ড. মোখলেস উর রহমানের কাছে জমা দেওয়া হয়। সুপারিশমালায় বিশেষভাবে প্রশাসনে দলীয় প্রভাব কমিয়ে দক্ষতা ও যোগ্যতার ভিত্তিতে নিয়োগ ও পদোন্নতির ওপর জোর দেওয়া হয়েছে।

বিএনপির জনপ্রশাসন সংস্কার কমিটির নেতৃত্বে এই সুপারিশমালা জমা দেন দলের চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য ও সাবেক সচিব ইসমাইল জবিউল্লাহ। তার সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন সাবেক জনপ্রশাসন সচিব আবু মোহাম্মদ মনিরুজ্জামান খান।

এই প্রস্তাবনায় প্রশাসনের আমূল সংস্কারের কথা বলা হয়েছে, যাতে তিন মেয়াদে নির্বাচন-পূর্ব প্রশাসনিক কার্যক্রম ঢেলে সাজানোর পরিকল্পনা অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। বিশেষত, প্রতিটি জাতীয় নির্বাচনের তিন মাস আগে প্রশাসনের সর্বস্তরে পরিবর্তন আনার কথা বলা হয়েছে। এ জন্য ডিসি ফিট লিস্ট তৈরি এবং দীর্ঘদিন ধরে একই পদে থাকা কর্মকর্তাদের বদলির প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে।

সুপারিশমালায় অতীতের তিনটি জাতীয় নির্বাচনে ভোট চুরির সঙ্গে জড়িত কর্মকর্তাদের আইনের আওতায় আনার কথা উল্লেখ করা হয়েছে। সেই সঙ্গে প্রশাসনে ঘাপটি মেরে থাকা দলীয় সুবিধাভোগীদের চিহ্নিত করে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানানো হয়েছে। এ ছাড়া যারা সিন্ডিকেট করে প্রশাসনিক কার্যক্রমে বাধা সৃষ্টি করছে, তাদের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণের প্রস্তাব রাখা হয়েছে।

দলটি দীর্ঘ মেয়াদে মেধাবী তরুণদের প্রশাসনে সংযুক্ত করার পরিকল্পনা এবং পিএসসি পদ্ধতির সংস্কার, বাধ্যতামূলক ফিল্ড ওরিয়েন্টেশন এবং দক্ষ জনবল তৈরির বিষয়টিও তুলে ধরেছে। দুর্নীতি প্রতিরোধের লক্ষ্যে প্রশাসনের দুর্নীতির শ্বেতপত্র প্রকাশের বিষয়টি উল্লেখ করা হয়েছে।

বিএনপির জনপ্রশাসন সংস্কার কমিটির প্রধান ইসমাইল জবিউল্লাহ এ বিষয়ে বলেন, “আমরা চাই প্রশাসন হবে জনগণের সেবক, যারা সত্যিকারের পেশাদারিত্বের মানদণ্ড বজায় রাখবে। ফ্যাসিস্ট সরকারের দোসরদের প্রশাসন থেকে সরিয়ে যোগ্য এবং দক্ষ কর্মকর্তাদের স্থান দিতে হবে।”

জনপ্রশাসনের সিনিয়র সচিব ড. মোখলেস উর রহমান জানান, “জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশন বিভিন্ন রাজনৈতিক দলকে চিঠি দিয়ে তাদের মতামত চেয়েছিল। বিএনপির এই সুপারিশগুলো সংস্কার কমিশনের চূড়ান্ত রিপোর্টের অংশ হয়ে উঠবে।”

বিশ্লেষকরা মনে করছেন, প্রশাসনের পেশাদারিত্ব নিশ্চিত এবং দলীয় প্রভাবমুক্ত করার জন্য এই প্রস্তাবগুলো গুরুত্বপূর্ণ। এগুলো বাস্তবায়িত হলে প্রশাসনে নতুন মাত্রা যুক্ত হবে এবং জনগণের আস্থা ফিরে আসবে।

এই প্রস্তাব জনগণের আকাঙ্ক্ষা পূরণে প্রশাসনকে আরো কার্যকর, স্বচ্ছ এবং সেবামুখী করতে সহায়তা করবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button