সংস্কার কমিশনের সুপারিশ বাস্তবায়নে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে বৈঠক করলো অন্তর্বর্তী সরকার

সংস্কার কমিশনের সুপারিশ বাস্তবায়নে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে বৈঠক করলো অন্তর্বর্তী সরকার
রাষ্ট্র সংস্কারের লক্ষ্যে গঠিত ছয় সংস্কার কমিশনের সুপারিশ বাস্তবায়নে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে বৈঠক করেছে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। বৈঠকে অংশ নেওয়া রাজনৈতিক দলগুলো দ্রুত সংস্কার প্রক্রিয়া শেষ করে দ্রুত জাতীয় নির্বাচন আয়োজনের দাবি জানিয়েছে।
গতকাল (শনিবার) রাজধানীর বেইলি রোডের ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের প্রথম বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। এতে সরকার ও বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের শীর্ষ নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
সংলাপ নয়, ছিল মতবিনিময় সভা
বৈঠকে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, “সংস্কার কমিশনের প্রস্তাব চাপিয়ে দেওয়ার জন্য নয়, আমরা শুধু সুপারিশগুলো তুলে ধরেছি। সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে রাজনৈতিক দলগুলোর আলোচনার ভিত্তিতে।”
জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের ভাইস চেয়ারম্যান আলী রীয়াজ বলেন, “এটি কোনো সংলাপ ছিল না, বরং সংস্কার প্রক্রিয়ার দিকনির্দেশনা নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা হয়েছে। দীর্ঘসূত্রতা না করে আমরা দ্রুত সংস্কার সম্পন্ন করতে চাই।”
নির্বাচন নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর ভিন্নমত
বৈঠকে বেশির ভাগ রাজনৈতিক দল জাতীয় নির্বাচনের আগে স্থানীয় নির্বাচন আয়োজনের বিরোধিতা করে। তবে গণ অধিকার পরিষদ, জাতীয় নাগরিক কমিটি এবং বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন স্থানীয় নির্বাচনের পক্ষে যুক্তি তুলে ধরে।
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, “সংস্কারের মাধ্যমে ন্যূনতম ঐকমত্য তৈরি করে দ্রুত জাতীয় নির্বাচন আয়োজন করতে হবে।”
ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ সংখ্যানুপাতিক পদ্ধতিতে নির্বাচন চাইলেও, জাতীয় নাগরিক কমিটি ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করার এবং এর নেতাদের বিচারের দাবি জানিয়েছে।
৬ মাসের মধ্যে নির্বাচন আয়োজনের পরিকল্পনা
আলী রীয়াজ জানান, রাজনৈতিক দলগুলোর মতামতের ভিত্তিতে ‘জুলাই সনদ’ নামে একটি চূড়ান্ত রূপরেখা তৈরি করা হবে, যা আগামী জাতীয় নির্বাচনের ভিত্তি হিসেবে কাজ করবে। তিনি বলেন, “আমরা চাই ৬ মাসের মধ্যে প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে নির্বাচন আয়োজন করতে।”
বৈঠকে বিএনপি, জামায়াতে ইসলামী, এলডিপি, জাতীয় পার্টি (কাজী জাফর), নাগরিক ঐক্য, ইসলামী আন্দোলন, খেলাফত মজলিস, গণসংহতি আন্দোলন, গণ অধিকার পরিষদসহ ২৬টি রাজনৈতিক দল ও জোটের প্রায় ১০০ জন নেতা অংশ নেন।
👉 সংস্কার প্রক্রিয়া ও জাতীয় নির্বাচনের বিষয়ে পরবর্তী বৈঠক শিগগিরই অনুষ্ঠিত হবে বলে জানিয়েছে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন।