সারাদেশ

ড. মুহাম্মদ ইউনূস: বিশ্বপরিবর্তনের অগ্রদূত ও বাংলাদেশের গর্ব

ড. মুহাম্মদ ইউনূস: বিশ্বপরিবর্তনের অগ্রদূত ও বাংলাদেশের গর্ব

ঢাকা, ৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৫:
বিশ্বের অন্যতম প্রভাবশালী ব্যক্তিত্ব ও শান্তিতে নোবেল বিজয়ী অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনূস বাংলাদেশসহ গোটা বিশ্বের জন্য এক অনন্য অনুপ্রেরণা। মানবকল্যাণ ও বৈশ্বিক সংকট মোকাবিলায় তিনি যে ভূমিকা রেখে চলেছেন, তা তাঁকে বিশ্বশান্তির দূত হিসেবে পরিচিত করেছে।

বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা

৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার গণ-অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর জনগণের সম্মিলিত চাওয়ার প্রতিফলন হিসেবে ৮ আগস্ট অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন ড. ইউনূস। এরপর থেকে তিনি লণ্ডভণ্ড হয়ে যাওয়া বাংলাদেশকে পুনর্গঠনের চেষ্টায় নিরলস কাজ করে যাচ্ছেন। তাঁর নেতৃত্বেই বাংলাদেশ গত ছয় মাসে আন্তর্জাতিকভাবে নতুন মর্যাদায় উন্নীত হয়েছে।

বিশ্বের প্রশংসা ও সম্মাননা

ড. ইউনূসের নেতৃত্বে বাংলাদেশকে ২০২৪ সালে ‘দি ইকোনমিস্ট’ সাময়িকী ‘কান্ট্রি অব দ্য ইয়ার’ হিসেবে ঘোষণা করেছে। এছাড়া, বিখ্যাত বিজ্ঞান সাময়িকী ‘নেচার’ তাঁকে ‘নেশন বিল্ডার’ হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে। নেচারের সেরা ১০ ব্যক্তিত্বের তালিকায় ৭ নম্বরে উঠে এসেছে তাঁর নাম।

সম্প্রতি, বিশ্বের প্রভাবশালী মুসলিম ব্যক্তিত্বদের তালিকায়ও স্থান পেয়েছেন তিনি। ‘দ্য মুসলিম ৫০০: দ্য ওয়ার্ল্ডস ৫০০ মোস্ট ইনফ্লুয়েনশিয়াল মুসলিমস’ তালিকায় তাঁর অবস্থান ৫০ নম্বরে।

বিশ্বদরিদ্র বিমোচনে তাঁর অবদান

গ্রামীণ ব্যাংকের প্রতিষ্ঠাতা হিসেবে ড. ইউনূস দারিদ্র্য বিমোচনের এক সফল মডেল তৈরি করেছেন, যা আজ বিশ্বব্যাপী প্রশংসিত ও অনুসৃত। ক্ষুদ্রঋণ কার্যক্রমের মাধ্যমে প্রান্তিক জনগোষ্ঠী, বিশেষ করে নারীদের অর্থনৈতিকভাবে স্বাবলম্বী করে তিনি সামাজিক পরিবর্তনের রূপকার হয়েছেন।

ক্রীড়া ও সংস্কৃতিতেও অবদান

তারুণ্যের শক্তিতে বিশ্বাসী ড. ইউনূস বিশ্ব ক্রীড়া ও সংস্কৃতি ক্ষেত্রেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখে চলেছেন। ২০২৩ সালে তিনি ‘ওয়ার্ল্ড ফুটবল সামিট’ থেকে আজীবন সম্মাননা পুরস্কার লাভ করেন এবং ২০২১ সালে টোকিও অলিম্পিকে ‘অলিম্পিক লরেল অ্যাওয়ার্ড’ অর্জন করেন।

বিশ্বশান্তির রোল মডেল

ড. মুহাম্মদ ইউনূসের ‘থ্রি জিরো’ তত্ত্ব—দারিদ্র্য মুক্তি, বেকারত্ব হ্রাস এবং কার্বন নিঃসরণ শূন্যে নামিয়ে আনা—বর্তমানে বিশ্বব্যাপী আলোচিত ও অনুসৃত হচ্ছে। তাঁর সামাজিক ব্যবসার ধারণা আজ দেশে-দেশে বিস্তৃত হয়ে বৈশ্বিক অর্থনৈতিক সংকট মোকাবিলায় কার্যকর মডেল হিসেবে স্বীকৃত।

বাংলাদেশের জন্য এক পরম গর্বের বিষয় যে, এই মহান ব্যক্তি বর্তমানে দেশের নেতৃত্ব দিচ্ছেন। তাঁর অভিজ্ঞতা ও দূরদর্শী নেতৃত্ব বাংলাদেশকে এক নতুন উচ্চতায় নিয়ে যেতে পারে বলে বিশ্লেষকরা মনে করছেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button